Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

গল্প: মায়া খেলা

কাবেরী রায় চৌধুরী

ডিসেম্বর ৪, ২০২১

Reunion with lost love
Bookmark (0)
Please login to bookmark Close

টাঁড় জঙ্গলের মাথার ওপরে তখন চাঁদটা ভেসে ভেসে উঠে আসছেপ্রতিটি পাতা ঘন সন্নিবিষ্টতারই ফাঁক দিয়ে কোজাগরী চাঁদের আলো চুঁইয়ে নামছেএত জমাট বাধা জঙ্গুলে অন্ধকার যখন চাঁদ মেখে নেয় তখন সে ক্রমশ রহস্যময় হয়ে ওঠে। 

‘কত বছরকত বছর হবে?’ স্বগতোক্তিও নয়, মনের ভেতরে হয়ে ওঠা কথাহিম পড়ছেগায়ের স্টোলটাকে গলা থেকে ভালো করে জড়িয়ে বেতের চেয়ারে পা মুড়ে আরাম করে বসলো তিথিমনেমনে হিসেব করল, সাড়ে ছ’বছর! হ্যাঁ, পাক্কা সাড়ে ছ’ বছর পরে আবার এই জঙ্গলে! চাঁদ এখন জঙ্গলের মাথায়!  

— ঠান্ডা লাগাস না রে, তুই বড় জেদিএইজন্য এত অসুখ করে তোর! তাও কথা বললে শুনিস না!
সুমনা কাশতে কাশতে ঘরের ভেতর থেকে বললএকটা ভালোলাগার হাসি ছড়িয়ে পড়ল তিথির সমস্ত মুখ জুড়ে! কী মায়া! কী টান!
— কী রে? শুনতে পেলি? শুনছিস না কি…?
এইবার আর উত্তর না দিয়ে পারা যায়? চাদরটা মাথায় জড়িয়ে নিতে নিতে বলল,
সব শুনেছিআয় না বাইরে। যা মিস করছিস না! এমন রাত আর ফিরে পাবি কিনা, আই ডাউটআবারও হয়তো দেখব, কিন্তু এই মনটা কি থাকবে দেখার মতো করে! আয়, ব্ল্যাঙ্কেটটাই জড়িয়ে আয়ঝুমরিকে আরেক কেটলি চা দিতে বলি।  

ধুপধাপ করে কীসব ফেলতে ফেলতে বিছানা থেকে ব্ল্যাঙ্কেট তুলে, গায়ে জড়িয়ে এসে পেছন থেকেই তিথির গালে হাত বুলিয়ে দিল সুমনাঠান্ডা কনকনে হাত গালে পড়তেইআঃকরে উঠেই হেসে ফেলেছে তিথি
– যাক তাহলে এলি! আয় বোসসত্যি করে বল তো ঘরে ভালো লাগছিল? বারান্দা দিয়ে সামনেই এমন জঙ্গল!
আর একটা বেতের চেয়ার পাশে টেনে ধপ করে বসে পড়ল সুমনা
সত্যি রে! মিস করতামঘর থেকেই বুঝতে পারছিলাম! তবে ওই যে গেঁতো হয়ে গেছি! তোকে একটা চুমু, নেতুই যা আহ্লাদি! ওয়াও! সত্যি মিস করতাম
– পাগল পাগল করা সৌন্দর্য! মরে যেতে ইচ্ছে করছে!

 

আরও পড়ুন: দোলনচাঁপা ভট্টাচার্যের গল্প: ট্রায়াল রুম

 

গভীর আবেগ সঞ্জাত স্বর তিথির
– এই আবেগ নিয়েই তো মরলি বাবু!
– না মরলে এরকম বেঁচে থাকতাম, বল? যারা মরে না তারা কি বেঁচে থাকে সত্যি? আধমরা জীবন নিয়ে কায়ক্লেশে বেঁচে থাকাকে আমি কোনওদিনই বেঁচে থাকা বলিনি, জানিস তো! এই যে মধ্য তিরিশে দুই বন্ধু এই জঙ্গলে বসে, তা কি আধমরারা ভাবতে পারে? তারা তখন কর্তার জাঙ্গিয়া কাচে! আর আমার বর আমাকে ছাড়া কিছু জানে না! এত বোকা, না? এইসব বলে চার মুঠো ভাত বেশি খেয়ে নেয়আর গায়ে গত্তি লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়!
তিথির কথা প্রায় লুফে নিয়েছে সুমনাবলল,
আরও আছেওমা! তোমাদের কী সাহস! আমি বাবা বর ছাড়া বেরবোই না! কত্তাও ছাড়বে না আমাকেসেগুলো বল?
হাসছে দু’জনেহাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল প্রায়। 
– এরাই সমাজ!

– দিদি গো, চাখেয়ে দেখো তো
বলে ঝুমরি এসে দাঁড়াতেই কথার মধ্যে ছেদ! ওয়াও, বলে লাফিয়ে উঠেছে তিথি
পকোড়া! কীসের ঝুমরি? ওয়াও!
সারাদিন সারাসময় লেপ্টে থাকা হাসিটাকে আকর্ণ বিস্তৃত করে সশব্দে হেসে উঠেছে ঝুমড়ি
পাতার বড়া দিদিখেয়ে দেখোপলতাপাতা, সজনেপাতা, কুমড়োপাতা, পেঁয়াজপাতা সব দিয়ে বানালাম
ঝুমরি নামের বছর কুড়ির মেয়েটির গাল টিপে দিয়েছে তিথিবলল,
এইজন্য তোর মুখটা এত মিষ্টি, বুঝলি?
ছায়া ঘনালো ঝুমরির দু’চোখের পাতায়এদিক ওদিক দেখে নিয়ে বলল,
আমার বাচ্ছা হয় না বলে মরদ অন্য মেয়ের কাছে যায়! আমার শাউড়ী পেটে লাথি মেরিচে কতবার…! আগে আমি ঘরে থাকতামএইখেনে কাজে লেগেছি বনবাবুর দয়ায়! উকে বলতে এইখেনে বলে কাজে লাগিয়ে দিলএখন আমার নিজের রোজকারে খাই
– বেশ করেছিস ঝুমরি
আর একটু ঘনিষ্ঠ হয়ে কাছে এসে ইতস্তত করে দাঁড়িয়ে কিছু বলবে কি বলবে না দ্বিধা নিয়ে বলল,
দিদি, তোমরা বিয়ে করোনি? রাগ কোরো না দিদি
আরে না রে
ওর কোমর জড়িয়ে নির্ভয় দিয়ে হেসে সুমনা বলল,
নাওই তোর বরের মতো হত আর কী, তাই..! 

যারা মরে না তারা কি বেঁচে থাকে সত্যি? আধমরা জীবন নিয়ে কায়ক্লেশে বেঁচে থাকাকে আমি কোনওদিনই বেঁচে থাকা বলিনি, জানিস তো! এই যে মধ্য তিরিশে দুই বন্ধু এই জঙ্গলে বসে, তা কি আধমরারা ভাবতে পারে? তারা তখন কর্তার জাঙ্গিয়া কাচে! আর আমার বর আমাকে ছাড়া কিছু জানে না! এত বোকা, না? এইসব বলে চার মুঠো ভাত বেশি খেয়ে নেয়আর গায়ে গত্তি লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়!

বিমল আনন্দ পেয়েছে যেন ঝুমরিচাঁদ আজ তার সমস্ত রূপ নিয়ে জঙ্গলের শরীরে আলস্যে শুয়েআশরীর ডুবে যেন তিথি! তবু ঝুমরির সারল্য দেখে হেসে ফেললবলল,
নাসে অনেক কথা।..  আর এক কাপ চা দিবি বাবু?
একগাল হেসে হ্যাঁ বলে প্রায় ছুট লাগালো সেসুমনা সেইদিকে তাকিয়ে বলল,
কী সরল না?
– হুমআমার না… জঙ্গলের ভেতরে ঢুকে গাছের পাতার ওপরে শুয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে!
ঠোঁট ওল্টালো তিথি। হাসছে সুমনা, স্নেহভরে বলল,
পাগলি একটা! দিনেরবেলা হলে বলতাম যারাতে যে সম্ভব না তুইও তো জানিস বাবু! তবে এইজন্যই তুই সকলের থেকে আলাদাঅথচ তোকেই বুঝল না কেউ! হতিস গোদা বুদ্ধির, বুঝতো!
স্বগতোক্তির মতো বলে যাচ্ছে সুমনা। নিঃশব্দ তিথি নৈঃশব্দ তাকে গ্রাস করেছে! পাতাদের জগত জেগে উঠেছে এখনজঙ্গলের জীবন জেগে উঠেছেরাতজাগা পাখিরা নৈঃশব্দ ভেঙে জীবনের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে! ঝুমরি তখনই চা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে এসে প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে বললো,
হেই গো দিদি! ওওই উপরে একজন এসেছে। তোমাকে খপর দিতে বললতোমাকে চিনে বলল
ভ্রু কুঁচকে গেছে তিথিরবলল,
আমার কথা বলল? ছেলে না মেয়ে? কবে এসেছে?
ঘাড় নাড়ছে ঝুমরি
হ্যাঁ হ্যাঁ তোমার কথাই.. বলল ওই যে সাদা চাদর জড়িয়ে বসে আছে ফর্সামতো দিদিমণি, ওনাকে বলো একজন ডাকছে

সুমনা হাঁ করে শুনছেতিথি সুমনার দিকে তাকিয়ে বলল,
আশ্চর্য! ভারী আশ্চর্য তো! কে রে বাবা?
বলতে বলতেই ঝুমরিকে জিজ্ঞেস করল,
নাম কী ছেলের? ছেলে না লোক না বুড়ো?
প্রশ্ন শুনে নৈঃশব্দ ভেঙে হো হো করে হেসে উঠলো সুমনাহাসতে হাসতে বলল,
বুড়ো হলে যাবি না?
কৃত্রিম রাগত স্বরে হেসে তিথি বলল,
তুই ….!  না, তুই শুধু ভাব একবার.. কে হে মহারাজ এলেন যে ওনার হুকুমে দাসী ছুটবে! এই শোন ঝুমরি, বলগে, আপনার নাম ধাম সব জানতে চেয়েছে দিদিমণিআর তেমন দরকার হলে উনি নীচে আসুন
– লোকটা আজই এসেচে দুপুরেতোমরা তখন বেড়াতে গিচিলেউনি এসে খেয়েই বেরিয়ে পড়েচিল গোএই একটু আগে ফিরলে
– নাম?

 

আরও পড়ুন: গৌতম চক্রবর্তীর গল্প: স্ক্রিপ্ট

 

– দাঁড়াও জিজ্ঞেস করে আসছিরেজিস্টিরি খাতা তো রঞ্জনবাবু সনগে নে চলে গেছেওইখেনে নাম পেতাম
– তবে জিজ্ঞেস করে এসো। 
যেমন ছুটতে ছুটতে গেল তেমনই লাফাতে লাফাতে ফিরল ঝুমরিবলল,
বলো বাঘ নয়ভয় নেই
খিলখিল করে হাসছে ঝুমরিবলল,
বাবাগো, কী মস্করা করে! লোকটা কিন্তু দেখতে খুব ইয়েআরে ছেলে গো
সুমনা হেসে ফেলেছে আবারতিথির মুখের ভাব হাসব কি হাসব না! সুমনা হাসতে হাসতে বলল,
সুন্দরী যা দেখে আয় তোর কোন ফ্যান? নির্ঘাত প্রেমিক কেউ! যা বাঘ নয় বলে দিয়েছেতাহলে আর ভয় কী?
চোখেমুখে ছেলেমানুষি তিথিরবলল,
তোরা কী শুরু করেছিস বলবি! দাঁড়া ঘুরে আসিদেখে আসি বাঘ না চুহা।  

স্বগতোক্তির মতো বলে যাচ্ছে সুমনা। নিঃশব্দ তিথি। নৈঃশব্দ তাকে গ্রাস করেছে! পাতাদের জগত জেগে উঠেছে এখন। জঙ্গলের জীবন জেগে উঠেছে। রাতজাগা পাখিরা নৈঃশব্দ ভেঙে জীবনের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে! ঝুমরি তখনই চা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে এসে প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে বলল, হেই গো দিদি! ওওই উপরে একজন এসেছে। তোমাকে খপর দিতে বলল। তোমাকে চিনে বলল।

রুম স্লিপারে ছট ছট করে শব্দ তুলে কাঠের সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় উঠে কমলা হলুদ পর্দা ঝোলানো ঘরের বাইরে থেকে গলার স্বর ভারী করে বলল,
এক্সকিউজ় মিকে আছেন?
– ভেতরে এসো
মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিদ্যুৎ স্রোত খেলে গেলমাটিতে গেঁথে গেল দুটো পাএই স্বর…!
– তিথি! ভিতরে এসো
পর্দা সরিয়ে দরজার বাইরেই দাঁড়িয়ে দেখছে তিথি বিবস্বানকেবুকের ভেতর কত সহস্র বিস্ফোরণ এই মুহূর্তে ঘটছে অনুভব করতে পারছে সে শুধুসমস্ত মুখ জুড়ে সেই আগের মতো হাল্কা অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণীয় হাসি! কালো শাল জড়িয়ে খাটের ওপর আধশোয়া হয়ে বিবস্বানহাতে আধপোড়া সিগারেটচোখে নতুন সংয়োজন কালো মোটা ফ্রেমের চশমাতাকে দেখেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
এসোঅপ্রত্যাশিতভাবে দেখা হবে ভাবিনি!
স্মৃতি বোধহয় এমনভাবেই কখনও কখনও আক্রমণ করে। তখন মানুষ বোধশূন্য হয়ে যায়! বিবস্বান! সেই লোকটা! সেই লোকটা, যার জন্য সমস্ত ভালোমন্দ ভুলে গেছিল সে একসময়! মা আত্মহত্যা করেছিল! বিবস্বান! সময় পিছিয়ে গেছে দ্রুতসময়ের সামনে দাঁড়িয়ে সে! খাট থেকে নেমে স্থানুবৎ দাঁড়িয়ে থাকা তাকে হাত ধরে টেনে এনেছে বিবস্বান

এসো! বোকা মেয়ে! সেদিনও বোকা ছিলে এখনো দেখছি সেম! তিথি
বিছানায় এনে বসিয়েছে তাকে বিবস্বানএখনও ধাতস্থ নয় সে।  চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে তার হাতে দিল বিবস্বান। বলল,
দেখোমনে আছে তুমি একদিন বলেছিলে যদি চশমা পরো কখনও, কালো মোটা ফ্রেমের পরবেমনে আছে?
মাথা নাড়লো তিথি মৃদুহ্যাঁ মনে আছে। সেই সকালের ভেতরে নিমজ্জিত এখন সেমায়ের বন্ধু বিবস্বানএকদিন স্কুল থেকে ফিরে খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে মা বলল,
আমাদের স্কুলে নতুন একজন টিচার এসেছে, জানিসখুব ইয়ং কিন্তু কী লেখাপড়া! হয়তো বেশিদিন পড়াবে নাওর যা কোয়ালিফিকেশন! কলেজে চলে যাবে! দেখতেও….!
বলে চুপ করে গেলেও মায়ের ঠোঁটের পাতায় এমন একটা হাসি নিমেষের জন্য খেলে গেল তা আগে কখনও দেখেনি সে
– আজ আসবে সন্ধেবেলারাতে খেতে বললামগত শনিবার বনানীদিও নেমন্তন্ন করেছিল।
– ওহ! আচ্ছা। 

roses photo
তিথির জন্য হলুদ গোলাপের তোড়া এনেছিল বিবস্বান। ছবি সৌজন্য: Teahub

বিকেলে বিনীতা আগে ফিরেছেনতিথির কলেজের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার জন্য সে বাড়িতেইবিনীতার মুখে অনেক অনেকদিন পর উজ্জ্বল আলো! কিশোরীসুলভ আচরণ! দ্রুতই চা খেয়ে রান্নায় বসে গেল। স্পষ্ট সেই সময়টাকে দেখতে পাচ্ছে তিথি
– হ্যাঁ তুমি এলেযেন কেউ এলো…! অস্ফুটে উচ্চারণ করলো তিথি
– মনে আছে তবে আমাকে? ভোলোনি তো?
ধীরে ধীরে মাথা নাড়ছে সেনানানা
– কেন ফিরলে আবার? খসখসে শুকনো গলায় বলল সে
– নিয়তি ফিরিয়ে দিয়েছে যদি ভাবি! আমি যখন সিঁড়ি দিয়ে উঠছি চমকে গেছি তোমার গলার আওয়াজ পেয়ে! কত কত বছর পরেও আমি ভুলিনি তিথি তোমার আওয়াজ!
সময়ের চক্রে স্থির তিথিবিনীতা আজ বহুবছর বাদে সেজেছেন! ঘন সবুজ টাঙাইল, লাল পেড়েচুলে স্বর্ণচাঁপা, চোখে কাজলের রেখা! তাতেই রানির মতো দেখাচ্ছে বিনীতাকেস্বামী মারা যাওয়ার পর আর তেমন সাজগোজে আগ্রহ ছিল না! তিথি নিজে পরেছিল হলুদ বাটিকের হাঁটুঝুল ফ্রকবিবস্বান এলো, দেখল, জয় করে নিল হৃদয়মায়ের জন্য লাল গোলাপের তোড়া আর তার জন্য হলুদ গোলাপের তোড়া এনেছিল

 

আরও পড়ুন: আলোলিকা মুখোপাধ্যায়ের গল্প: করালী দখলদারের ইতিবৃত্তান্ত

 

বিনীতা আর বিবস্বান সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করছিল কফি খেতে খেতেতিথি বিজ্ঞানের ছাত্রী। সাহিত্যে অত আগ্রহ ছিল না। তাই সামান্য কথাবার্তার পর নিজের ঘরে চলে গেলেও ছেলেটি তাকে সম্মোহিত করে গেছে যে, বুঝতে পারছিলভেতরে ভেতরে উচাটন! ডাইনিং টেবিলে আবার মুখোমুখিদু’একবার চোখাচোখিকোথা থেকে একরাশ ঢেউ এসে ধাক্কা মেরে চলেছে যেন! গভীর তৃষ্ণার্ত চোখ!
– আপনি কখনও চশমা পরলে কালো মোটা ফ্রেমের পরবেন
সেই চোখ বাঙ্ময় হয়ে উঠেছিল
– তিথি! মিসহ্যাপটা ভুলে যাওয়া যায় না তিথি?

হাতের পাতায় হাত রেখেছে বিবস্বান
এই যে এত বছরবলো, এতবছর বাদে এইভাবে দেখা হওয়া… এর কি কোনও মানে নেই? তোমার বা আমার কারওরই কি হাত ছিল বলো মায়ের চলে যাওয়ায়?
– আমার বন্ধু অপেক্ষা করছে নীচে! সুমনাআমি যাই
– না যাবে নাএত বছর বাদে আমি তোমাকে পেয়েছি তিথি! আয়াম নট জোকিং! বন্ধুকে বলে এসো। নাহলে ফোন করো, বলো একটু পরে আসছি
– মায়ের চলে যাওয়া আমি মন থেকে মানতে পারি না! মাথা ঝাঁকাচ্ছে তিথি
আমার জন্যই তো! তুমি বিয়ে…? 
– না
তুমি? অবস্থা দেখো, তোমার কথাই জিজ্ঞেস করলাম না!
– বিয়েতে বিশ্বাস নেই আমার! চারপাশে যেভাবে বিয়ে আর প্রতারণা দেখছি তাতে ফেইথ নেই! প্রেমহুঁএসেছিল। কিন্তু তোমার মতোই টেঁকেনি! আজকাল বোধহয় কেউ একজনে স্যাটিসফায়েড নয়!
– তুমি তো একজনেই, জানি
– হুঁআমি যাব এবার, প্লিজআমি আর পুরনো সময়ে ফিরে যেতে চাই না! অতীত ভুলে গেছি সব
– ভোলোনি তিথিকিচ্ছু ভোলোনিনা তুমি না আমিআমার কী করার ছিল বলো তো? বিনীতাকে আমি ফিরিয়ে দিতে পারছিলাম না শুধু ওর অসহায়তার জন্য

 

আরও পড়ুন: অন্বেষা দত্তের ছোটগল্প: জোড়াতালি

 

সাদা ধপধপে চাদর আঙুলে খুঁটছে তিথিসেইসব দিনরাত্রির সামনে দাঁড়িয়ে সে এই মুহূর্তেবিনীতাকে দেখতে পাচ্ছেহঠাৎ করেই খুব তরুণী হয়ে উঠেছেনস্বামীর মৃত্যুর পর যিনি কোনওমতে একটা লম্বা বেণী বেঁধে দোমড়ানো কুঁচকানো শাড়ি পরে স্কুলে যেতেন, সেই বিনীতা একদিন কাজল পরতে পরতে আয়নায় প্রতিবিম্ব দেখে কেমন হাসলেন! বিপরীতে বসে থাকা তিথি অবাকহঠাৎ বিনীতা সম্বিত পেয়ে কৈফিয়ৎ দেবার ভঙ্গিতে বললেন,
বড়দি বলছিল, জানিস? অনেকদিন ধরেবিনীতাদি, এইভাবে আপনাকে দেখতে ভালো লাগে না আমারআগের মতো ফিটফাট হয়ে আসুন তো? অত সুন্দর চোখ কাজল ছাড়া মানায়? মেয়ে বকে না?… তাইখারাপ লাগছে রে?
ধীরেধীরে মাথা নেড়েছিল তিথি
ন্নাহভালোই তো বলেছেন
স্কুল থেকে মাঝেমধ্যেই ফিরতে দেরি হতে লাগলঅভিমানে গাল ফুলত তিথির।
মা!! এত দেরি করো কেন আজকাল? কলেজ থেকে এসে তোমাকে না দেখতে পেলে ভালো লাগে না মা!

স্মৃতি বোধহয় এমনভাবেই কখনও কখনও আক্রমণ করে। তখন মানুষ বোধশূন্য হয়ে যায়! বিবস্বান! সেই লোকটা! সেই লোকটা, যার জন্য সমস্ত ভালোমন্দ ভুলে গেছিল সে একসময়! মা আত্মহত্যা করেছিল! বিবস্বান! সময় পিছিয়ে গেছে দ্রুতসময়ের সামনে দাঁড়িয়ে সে! খাট থেকে নেমে স্থানুবৎ দাঁড়িয়ে থাকা তাকে হাত ধরে টেনে এনেছে বিবস্বান

একদিন বিনীতা বাড়ি ফিরলেন আলোর মতো উজ্জ্বল মুখ নিয়েএত আলো যে চোখে পড়েবাড়ি ফিরেই কোনও কথা না বলে সোজা বাথরুমে চলে গেলেনযেন এড়িয়ে গেলেন মা তাকে, তিথির মনে হয়েছিলবাথরুম থেকে ফিরে সোজা শুয়ে পড়লেন বিনীতা, মাথা পর্যন্ত চাদর চাপা দিয়ে
– মা!!! কী হল মা? শরীর খারাপ? মা!!
– ন্নাহ, একটু ক্লান্তলাইট অফ করে দাওআমি পরে উঠে ভাত বসাব
– আমি বসিয়ে দিতে পারব, মাতুমি শোওডাক্তার জেঠুকে ফোন করব?
– বললাম তো নাএকটু রেস্ট নিলেইলাইট অফ করে দাও
একটু রাতের দিকে উঠে ভাত চাপাতে চাপাতে মুখ না ফিরিয়েই বিনীতা বললেন,
এত জোরে ঠোঁটে ধাক্কা খেয়েছি না, বিশ্রীভাবে কেটে গেছে!
– কই দেখি

গলার ভেতর থেকে নাভিমূল পর্যন্ত শুকিয়ে গেলো তিথির। এ যে দংশন চিহ্ন! যে চুম্বন চিহ্ন! চিহ্ন সে জানে! সে দেখেছেবাবা থাকতে দেখেছে মায়ের ঠোঁটে! চিহ্ন সে বইতে পড়েছেসিনেমায় দেখেছে! ধাক্কা লাগার চিহ্ন নয়অস্ফুটে বলে উঠেছিল,
মা!!!
শরীর খারাপ লাগতে শুরু করলো তিথিররাতে খেতে গিয়ে বমি করে ফেললবিনীতা অবাক হয়ে বললেন,
তোর আবার কী হল? ঠিক ছিলি তো! কীরে?
– কিছু না
সারারাত দু’জনে দু’দিক ফিরে শুয়ে রইল জেগে! মনের মধ্যে, ‘তবে কি মা ওই টিচারের সঙ্গে?’ বিবস্বানকে নিয়ে সে তো ভেবেছে এই কয়েকদিন ধরে! হাল্কা চাপদাড়ি উজ্জ্বল চোখবুকের ভেতরটা কাঁপিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট

– কী ভাবছ? যতটা খারাপ ভেবে এসেছ আমি ততটা নই তিথি!
অতীতে ঘুমিয়ে পড়া এক সময় থেকে হুড়মুড় করে জেগে উঠল সেবিবস্বানের মুখের দিকে একবার তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিয়েছেএই চোখের দিকে তাকাতে পারে না
– তিথি! প্লিজ়ভাবোএই দেখা হওয়াটা কি এমনিই বলতে চাও?
– আমি জানি না!
– জানোঅস্বীকার করতে চাইছ
– কেন মায়ের সঙ্গে আবার..?
– বিনীতার জন্য খারাপ লাগাটা আমার আজও আছে তিথিসে তোমার কাছে মা হলেও আমার কাছে একজন নারীতোমাকে তো আগেও বলেছিবলিনি? অস্বীকার করিনি তো! বিনীতার মধ্যে তীব্র একটা আকর্ষণ ছিলঅতৃপ্ত বাসনা! বাসনাই…!  ওর চোখেমুখে ফুটে উঠতে আমি দেখেছিআমার সঙ্গে মন খুলে কথা বলত। আমিই বলেছিলাম সাজলে ভালো দেখায় তোমাকেবলেছিল, কী লাভ? কার জন্য সাজব? খুব হতাশ ছিলকথায় কথায় মরে যাওয়ার কথা বলতআমি দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম, তোমাকে তো বলেছিলামকিন্তু সেটা প্রেম নয় তিথিএকজন মানুষকে বাঁচাতে চাওয়ার ইচ্ছা ছিলআর কিছু নয়দু’জনেই জানতাম এই সম্পর্ক থেকে বেশি কিছু পাওয়ার নেই! তারপরেও ইয়েস, উই হ্যাড সেক্স! বেশ কয়েকবার, বিনীতার ইচ্ছাতেইনা করতে পারিনিআফটার অল পুরুষ তো! অথচ তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি ততদিনেওটা ছিল প্রেম। 

মোবাইল বাজতেই গম্ভীর পরিবেশ থেকে চমকে উঠেছে দুজনেইঅস্ফুটে সে বলল,
সুমনা! হ্যাঁ সুমনা! আসছি রেএকটু বোসআসছি!
তিথির জন্মদিনবিবস্বান আর স্কুলের তিন-চারজনকে নিমন্ত্রণ করেছে বিনীতাফুলের স্তবক, বই, ক্যাডবেরির সঙ্গে চিরকুট! ‘অনেক ভালোবাসিকাল দেখা করবে? মিউজিয়ামের সামনে তিনটেতেপ্লিজ!’
সারারাত ছটপটতাহলে মায়ের সঙ্গে কিছু নয়? ভুল ভেবে এসেছিল! ছি ছি!
আমাদের ছ’টা মাস!!
– মনে পড়ছে তিথি? পড়ছে? এই? বলোপ্লিজ… 

সাদা ধপধপে চাদর আঙুলে খুঁটছে তিথি। সেইসব দিনরাত্রির সামনে দাঁড়িয়ে সে এই মুহূর্তে। বিনীতাকে দেখতে পাচ্ছে। হঠাৎ করেই খুব তরুণী হয়ে উঠেছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর যিনি কোনওমতে একটা লম্বা বেণী বেঁধে দোমড়ানো কুঁচকানো শাড়ি পরে স্কুলে যেতেন, সেই বিনীতা একদিন কাজল পরতে পরতে আয়নায় প্রতিবিম্ব দেখে কেমন হাসলেন! বিপরীতে বসে থাকা তিথি অবাক। হঠাৎ বিনীতা সম্বিত পেয়ে কৈফিয়ৎ দেবার ভঙ্গিতে বললেন, বড়দি বলছিল, জানিস? অনেকদিন ধরে… বিনীতাদি, এইভাবে আপনাকে দেখতে ভালো লাগে না আমার।

– হুঁমা বুঝতে পেরে গেছিল! ভালোবাসলে মানুষ কী তীব্র হয়ে ওঠে, না? আমার জামায় তোমার পারফিউমের গন্ধ পায় নাহলে কেউ! আমার ভেতরে পরিবর্তন আর তোমার চেঞ্জগুলো লক্ষ করেছিল মা! ভালোবাসলে অমন করে, এখন বুঝিআমরা সন্দেহ বলি যাকে!
– হুমম..! আমি বুঝিয়েছিলামতবে তোমার সঙ্গে যেদিন বুঝতে পেরেছিল সেইদিন থেকে আবার আগের মতো হয়ে গেল! সাজে না! জীবনের প্রতি একটা নেগেটিভ অ্যাটিটিউড!
– আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তুই কি প্রেম করছিস? ভালোবাসিস কাওকে? লুকোস নাবলেছিলাম, নামা চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, তোর জামায় বিবস্বানের পারফিউমের গন্ধ পেয়েছি কয়েকবারবল? আমি হ্যাঁ বলেছিলাম
গভীর দীর্ঘশ্বাস ঘর জুড়ে!
– উকিলকে ডেকে প্রপার্টি টাকাপয়সা আমার নামে করে দিয়েছিল
ভেঙে গেল কথাগুলো কান্নার দমকেযদিও সামলে নিয়েছে সেপিঠে আলতো করে হাত রেখেছে বিবস্বানকান্না সামলে নিয়েছে তিথিনীরব
– তিথি!! আর একবার, হয় না? এই দেখা হওয়া কি এমনিই? কোনও গুরুত্ব নেই

সুদূর থেকে যেন কথা ভেসে আসছে
মা! আমার মা’টা চিরদিন অসুখী রয়ে গেল! বাবার সঙ্গেও যে খুব সুসম্পর্ক ছিল, তা নয়, জানো? কিন্তু মা বাবাকে ভালোবাসততাই বাবা চলে যাওয়ার পর মা কেমন ভেঙে পড়েছিল! তুমি মাকে জীবনের দিকে ফেরাতে চেয়েছিলে কিন্তু সেটা একটা ভুল প্ল্যান! কমপ্লিটলি রং একটা ভাবনা ছিল তোমার! এতে বরং মা আরও ভেঙে পড়ল! তারপর আমি.. হেঃ! আমিও তোমার প্রেমে! যদিও তখন জানতাম না মায়ের সঙ্গে তোমার কিছু একটা…! কিন্তু তুমি এটা না করলেই পারতেআমি তো অনেকটাই ছোটো তখন!

 

আরও পড়ুন: বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প: পশমিনা


– প্রেম ওভাবে ভেবেচিন্তে আসেবিনীতার সঙ্গে একটাডুবে যাওয়া একটা মানুষকে বাঁচিয়ে তুলতে চেয়ে ওর ইচ্ছেতেই…! আর তুমি প্রেম ছিলে তিথিএকটা কথা বলো, আমি বিয়ে করিনি কেন? মেয়ের অভাব? বলো? কেন করিনি? অপরাধবোধ আমাকে তাড়িয়ে বেরিয়েছে তিথিমনে হতো দুদুটো মানুষের সঙ্গে আমি অন্যায় করেছি!
– কলেজ থেকে ফিরে দেখলাম মা ঘুমোচ্ছে! চিরঘুম! চিরশান্তির দেশে…!
তিথির চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে বলতে বলতে
আমার মা! আমার মা বুঝেছিল সব! তাইঅনেক অভিমান নিয়ে কেউ যদি পৃথিবী ছাড়ে বিবস্বান…!
চোখের জলের ধারা বাঁধ মানছে না এখন
– স্যরি বাবুস্যরিসব দোষ আমারসবআমি জানি
চোখের জল দু’হাতের পাতায় মুছে নিয়েছে তিথিমাথা নাড়লো
হ্যাঁতুমি না এলে…  তুমি না এলেই পারতে আমাদের লাইফে!
– জানিকী শাস্তি দেবে বলো? আমি মাথা পেতে নেবআমিও তিলে তিলে মরছিলাম তিথিতুমি তো মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে দিয়েছিলে! আমি অনেক চেষ্টা করেছি তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে! তুমি কেমন নেই হয়ে গেলে! তুমি জানো আমার মা চেয়েছিলেন বিয়ে দিয়ে তারপর মরতেসব মা’ই যেমন চায়! আমি মাকেও দুঃখ দিলামমা নেই! এরপরেও কি ক্ষমা..?. তিথি!
– সময় দাওবন্ধু থাকোআমি আর সুমনা একসঙ্গে থাকিওর ডিভোর্স কেসছেলেও বাবার দলে পয়সার লোভে! লোকে আমাদের লেসবিয়ান বলেহাহাহামানুষ আসলে নিজের যেটাতে আনন্দ হয় সেভাবেই ভাবে, দেখলাম
হাসছে বিবস্বানহাল্কা হয়ে এসেছে পরিবেশ অনেকটাইবলল,
তোমার লেসবো পার্টনারকে দেখে আসি চলোওই যে কী বলে, সতীন, নাহাহা হাহাদেখি কেড়ে নিতে পারি কিনা তার গার্লফ্রেন্ডকে
চোখের জল মুছছে তিথি, কান্নার সঙ্গে হাসি মিশে গেছেবলল, ধ্যাৎ। 

জঙ্গলের মাথা ছেড়ে আকাশের মাথার ওপরে চাঁদ এখনমায়া আলো ছড়িয়ে পড়েছে সমস্ত চরাচর জুড়ে! বিবস্বান সুমনার দিকে চেয়ে বলল,
আপনি কী বলবেন সুমনা, নিয়তি না গন্তব্য না অন্য কিছু? আমাদের এভাবে এখানে দেখা হওয়া এতগুলো বছর পরে..! তিথির বিয়ে না টেঁকা, আমার বিয়ে না করা… এভাবে এই জঙ্গলে দেখা হওয়া…!
সুমনার দিকে ফিরে তিথি বলল,
মা কষ্ট পাবে রে! আমি পারব না
– পাবে নাআমি বলছিউনিও জানতেন…  বুঝতেনএভাবে দুজনেই কষ্ট পাবি, মানে হয় নাচাঁদের দিকে তাকিয়ে তিথি উত্তর খুঁজছেকেমন আক্ষেপ করে বলল,
এই গ্রহনক্ষত্রগুলোই কালপ্রিট

কবি ও সাহিত্য়িক কাবেরী রায়চৌধুরীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। লেখালেখির শুরু প্রবন্ধ প্রকাশ দিয়ে। সাত পুতুলের সাত কথা‚ চাতক জল‚ নদীটি আজও কথা বলে, যে যেখানে দাঁড়িয়ে‚ ঠাকুরবাড়ির সারদাসুন্দরী, অর্ধেক আকাশ‚ শরীরী ওঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য, এই সবকটি মাধ্যমেই কাবেরী নিজেকে প্রকাশ করেছেন।

Picture of কাবেরী রায় চৌধুরী

কাবেরী রায় চৌধুরী

কবি ও সাহিত্য়িক কাবেরী রায়চৌধুরীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। লেখালেখির শুরু প্রবন্ধ প্রকাশ দিয়ে। সাত পুতুলের সাত কথা‚ চাতক জল‚ নদীটি আজও কথা বলে, যে যেখানে দাঁড়িয়ে‚ ঠাকুরবাড়ির সারদাসুন্দরী, অর্ধেক আকাশ‚ শরীরী ওঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য, এই সবকটি মাধ্যমেই কাবেরী নিজেকে প্রকাশ করেছেন।
Picture of কাবেরী রায় চৌধুরী

কাবেরী রায় চৌধুরী

কবি ও সাহিত্য়িক কাবেরী রায়চৌধুরীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। লেখালেখির শুরু প্রবন্ধ প্রকাশ দিয়ে। সাত পুতুলের সাত কথা‚ চাতক জল‚ নদীটি আজও কথা বলে, যে যেখানে দাঁড়িয়ে‚ ঠাকুরবাড়ির সারদাসুন্দরী, অর্ধেক আকাশ‚ শরীরী ওঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য, এই সবকটি মাধ্যমেই কাবেরী নিজেকে প্রকাশ করেছেন।

3 Responses

  1. ভালো লাগল। হ‍্যাঁ” পুরোটি পড়েই বলছি। তবে আমি এই কাহিনী রি-রাইট করলে সরলভাবে শেষ হতো না, টানাপড়েন থেকে যেত শেষ পর্যন্ত অনন্তকালের জন‍্য।

  2. দারুণ! খুব ভাল। ডিসকোর্সটাও সুন্দর। টাঁড় অঞ্চলে চাঁদের রাতের প্রেক্ষাপটও খুব ভাল। সাংকেতিক। অনেক শুভেচ্ছা। এমন জংগলের প্রেক্ষাপটে লেখা গল্পের প্রতি আমার দুর্বলতা আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস