সুদূর জাপানে বসেও দুর্গাপুজোর আঁচ গায়ে না লাগিয়ে থাকতে পারে না বাঙালিরা। তাই জাপানের টোকিও শহরেও মহা ধূমধামে প্রতি বছরই পালিত হয় দুর্গোৎসব। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি। বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন অফ টোকিও, জাপান, সংক্ষেপে BATJ গত ৩১ বছর ধরে সে কাজটাই করে আসছে ঝাঁ চকচকে টোকিও শহরের বুকে। তবে শুধু দুর্গাপুজো নয়, রবীন্দ্র জয়ন্তী থেকে মহালয়া, পয়লা বৈশাখ থেকে সরস্বতী পুজো, বঙ্গজীবনের কোনও উৎসবেই ভাটা পড়তে দেন না তাঁরা। বস্তুত, BATJ টোকিওর সবচেয়ে পুরনো বাঙালি সমিতির একটি, যারা ১৯৯০ সাল থেকে নিষ্ঠাসহকারে প্রতিবছর দুর্গাপুজো করে আসছে ৷
তবে ২০২০ সাল সারা বিশ্বের কাছেই অনেকটা আলাদা। অতিমারীর শঙ্কা সঙ্গে নিয়েই BATJ এবছর দুর্গোৎসব পালন করতে চলছে ৷ নানা সরকারি বিধিনিষেধ মেনে এবারের পুজো অনেকটাই সংক্ষিপ্তভাবে অনুষ্ঠিত হবে ৷ তবে এখানে পুজোর আয়োজন হয়, প্রবাসের চিরাচরিত রীতি মেনেই, পুজোর কাছাকাছি কোনও সপ্তাহান্তে। এ বার সেদিক থেকে কিছুটা সুবিধে রয়েছে, কারণ অষ্টমী এবং নবমী সপ্তাহান্তেই পড়েছে। ফলে ২৪ অক্টোবর, অষ্টমীর দিন, কারাসুয়ামা কমিউনিটি সেন্টার (সেতাগায়া)-এর মূল অভিটোরিয়ামে পূজোর সব রকম আচার অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে।
অন্যান্য বারের চেয়ে লোকসংখ্যাও সীমিত রাখা হয়েছে বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ৷ মাত্র ১৬০-১৮০ জন অনুমোদিত সদস্য অংশগ্রহণ করতে পারবেন ৷ সকলকে মাস্ক পরে থাকা ও ন্যূনতম দূরত্ববিধি মেনে চলবার আবেদন করা হয়েছে ৷ পূজোর প্রসাদ এবার প্যাকেট করে বিতরণ হবে এবং ভোগও জাপানি বেন্টো বক্সে সকলকে দেবার পরিকল্পনা করা হয়েছে ৷
BATJ-র নিজস্ব পূজাবার্ষিকী ‘অঞ্জলি’ এবার তার ২৫তম বর্ষে পা দিল। সকলের লেখা-ছবি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে সেটি। তবে এবারে অবশ্যই তার ডিজিটাল আত্মপ্রকাশ। এছাড়া BATJ-র পুজোর আরও এক প্রধান আকর্ষণ, তার ঘরোয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৷ যদিও নানা বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে এবার আর সেটি মঞ্চস্থ করা সম্ভব হবে না। তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে থাকছে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে পুজো উপলক্ষে বিশেষভাবে তৈরি নাচ ও গানের ভিডিও ৷ মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মাননীয় রাষ্ট্রদূত শ্রী সঞ্জয় কুমার বর্মা ৷