banglalive logo
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

১৯৭৬-২০২৩: বইমেলার একাল সেকাল

Bookmark (0)
ClosePlease login

No account yet? Register

Cover story on Kolkata book fair
Cover story on Kolkata book fair

একটা সময় প্রতিটা পাড়ায় লাইব্রেরি ছিল। শুধু তাই নয় কোনও কোনও লোকের বাড়িতেও একটা আস্ত লাইব্রেরি ছিল। এখনও বহু লোকের বাড়ির ড্রইংরুমে পাহাড়-প্রমাণ বই দেখা যায়। অবশ্য বই পড়ার নেশা আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। আগে লোকে ঘর সাজাতেন বই দিয়ে। এখন ঘর সাজানোর জন্য প্রচুর জিনিস এসে গেছে। মানুষের বই পড়ার চাহিদা কমে যাওয়ার একটা মূল কারণ অবশ্যই টিভি ও মোবাইল। যাই হোক, বইয়ের চাহিদা কিছু কমলেও বেশ কিছু নতুন পাঠকও তৈরি হয়েছে। এই নব্য পাঠকদের জন্যই বইমেলা। সম্ভবতঃ উনিশশো পঁচাত্তর সালে বইমেলা শুরু হয়েছিল। তখন আমরা কলেজ নিয়েই মেতে থাকতাম,বইমেলা নিয়ে তাই  বিশেষ আগ্রহ ছিল না। কিন্তু বই পড়ার নেশা ছোট থেকেই ছিল। খুব ছোটবেলায় বাবার এনে দেওয়া ছোটদের বই দিয়েই আমার পড়ার নেশার সূত্রপাত। সেগুলোর নাম আমার আজও মনে আছে— মৌচাক, রামধনু, রংমশাল, শিশুসাথী, মাসপয়লা, কৈশোরক ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো মূলত পুজোর সময় বেরোত। বড়দের জন্যে ছিল যুগান্তর, আনন্দবাজার পত্রিকা, দেশ, অমৃত প্রভৃতি। ছোটদের আনন্দমেলা তখনও বেরোয়নি। ছোটদের একমাত্র মাসিক পত্রিকা বলতে দেব সাহিত্য কুটিরের ‘শুকতারা’। যে কথা বলছিলাম, ছিয়াত্তর সাল থেকে বইমেলা শুরু হলেও প্রথম প্রথম এই মেলা আমাদের একটুও টানত না। বরং ‘বঙ্গ সংস্কৃতি সম্মেলন’-এর আকর্ষণ সেসময় মানুষের কাছে অনেক বেশি ছিল, কারণ এই সম্মেলনে নাটক, আধুনিক গান, রাগপ্রধান গান, নৃত্য, বাদ্যযন্ত্র প্রভৃতি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক মানুষ একসঙ্গে উপভোগ করতে পারতেন। কিন্তু কালক্রমে বঙ্গ সংস্কৃতিকে তুলে দিয়ে সেই জায়গা নিয়ে নিলো বইমেলা। বঙ্গ সংস্কৃতিকে আমরা ভালোবাসতাম, কিন্তু ক্রমে বইমেলা প্রাণের চেয়েও পিরিত হয়ে গেল। ১৯৮৪ সালে আমাদের এই বইমেলা আন্তর্জাতিক বইমেলার স্বীকৃতি অর্জন করে।
kolkata book fair
কলেজ থেকে বেরোলাম উনিশশো সাতাত্তর সালে। বেরিয়েই আমরা যে যার মতো কাজের খোঁজে ছড়িয়ে পড়ি। আমি কয়েকদিন J. WALTER THOMSOM-এ কাজ করেছিলাম। এমন সময় আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে কিছু কাজের জন্যে ডেকে পাঠায় আমাকে। JWT ছেড়ে আনন্দবাজারে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করলাম চোদ্দ মাস। এরপর চলে এলাম দিল্লিতে। সেখানে খুশবন্ত সিং-এর তত্ত্বাবধানে কাজ করলাম দুবছর। দুবছর পরে ফিরে এলাম সেই আনন্দবাজারে। আনন্দবাজারে তখন সাহিত্যিকদের রমরমা। কাকে ছেড়ে কাকে দেখি। স্কুলে পড়াকালীন প্রচুর গল্প উপন্যাস পড়েছি। সমরেশ বসু তখন আমার আইডল ছিলেন। তখন সব লেখা যে  ভাল লাগত তা নয়, তবু গোগ্রাসে গিলতাম। ক্রমে অধিকাংশ লেখকই প্রিয় হয়ে গেলেন। একবার নীরোদ সি চৌধুরী বলেছিলেন “পঞ্চাশের দশকের পরে কোনও উৎকৃষ্ট বাংলা সাহিত্য রচনা হয়নি”। তারপর আমি বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পড়তে শুরু করলাম। এঁদের সমস্ত লেখা যে আমার পড়া হয়েছে তা নয়, তবে অনেকটাই পড়েছি। বইমেলার কথায় আসা যাক। কলকাতায় ফিরে সেইবার বইমেলায় গেলাম প্রথমবার। কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার আগে যখন আনন্দবাজারে কাজ করেছিলাম তখন ‘রান্নার বই’ নামে লীলা মজুমদারের একটা বই আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বেরিয়েছিল। সেই প্রথম আমার আঁকা বই বেরোনো। বইটা হাতে পেলাম দিল্লিতে বসে। খুব আনন্দ হয়েছিল বইটা হাতে পেয়ে। কারণ প্রথমত- আমার প্রথম অলঙ্কৃত বই, দ্বিতীয়ত – লীলা মজুমদারের লেখা। অনেকগুলো ছবি এঁকেছিলাম বইটাতে। এরপর আর একটা বই এঁকেছিলাম মতি নন্দীর ‘হাওয়াবদল’। তখনও মতি নন্দীর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়নি। ওঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল গভীরভাবে কলকাতায় ফিরে আসার পর। অনেকগুলো কাজ করেছিলাম। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক রবিবার সকালে ওঁর বাড়িতে লুচি-আলুরদমের নিমন্ত্রণ থাকত। আর সাথে থাকত লেখা নিয়ে, আঁকা নিয়ে আলোচনা। অনেক কিছু শিখেছি এঁদের থেকে। 

আনন্দবাজারে তখন সাহিত্যিকদের রমরমা। কাকে ছেড়ে কাকে দেখি। স্কুলে পড়াকালীন প্রচুর গল্প উপন্যাস পড়েছি। সমরেশ বসু তখন আমার IDOL ছিলেন। তখন সব লেখা যে  ভাল লাগত তা নয়, তবু গোগ্রাসে গিলতাম। ক্রমে অধিকাংশ লেখকই প্রিয় হয়ে গেলেন। 

 ক্রমে বইমেলা আমাদের আড্ডার একটা প্রধান জায়গা হয়ে ওঠে। সেসময়কার লেখকদের মধ্যে ছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টাপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টাপোধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখাপাধ্যায়, বিমল কর, পূর্ণেন্দু পত্রী, আর ছিলেন সমরেশ মজুমদার। আমি আনন্দবাজারে ঢোকার পর প্রতিবছর পূজার সময় সমরেশ বসুর ছোটদের উপন্যাস আঁকতে গত। সেইটাই বইমেলায় বই হয়ে বেরোত। এরপর সুনীল গাঙ্গুলি, বিমল কর, সঞ্জীব চট্টাপাধ্যায়- একে একে তাঁদের বই বইমেলায় বেরোত। একটা সময় আমরা প্রতিদিন বইমেলায় যেতাম। প্রতিদিন লেখকদের সঙ্গে আড্ডা হত। বিমল কর আর মতি নন্দী থাকতেন আমার বাড়ির কাছাকাছি, আড্ডাটা তাই তাঁদের বাড়িতেই হত। বিমলদা অর্থাৎ বিমল কর কোনওদিন বইমেলায় গেছেন কিনা জানি না। আমার মনে হয় রমাপদবাবুও (চৌধুরী) কোনওদিন বইমেলায় যাননি।

Sunil Ganguli book cover illustration by Anup Roy
সুনীল গাঙ্গুলির এমন অনেক বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছি

যখন বইমেলা ক্রমশ ধীরে ধীরে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছিল এমন সময় উনিশশো সাতানব্বই সালে এক প্রকাণ্ড অগ্নিকাণ্ডের ফলে সেই বছর মাঝপথেই মেলা বন্ধ হয়ে যায়। এত দিন বইমেলা হত পার্কস্ট্রিটে। আগুন লাগার পরে সল্টলেকে মেলা স্থানান্তরিত হল স্টেডিয়াম সংলগ্ন ময়দানে। এরপর ‘মিলনমেলায়’, অর্থাৎ সায়েন্স সিটির উল্টোদিকে তিন বছরের জন্যে মেলা সরে গিয়েছিল। এরপর সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে স্থায়ীভাবে বইমেলার আসর হতে শুরু করে। প্রতিবছরের মতো এবারেও একটা থিম রাখা হয়েছে। এবারের থিম হল ‘স্পেন’। সেদিনের বইমেলার সঙ্গে আজকের বইমেলার কোনও মিল নেই। আজকের বইমেলায় শুধু বই বিক্রি হয় না, বই ছাড়া খাবারদাবার ইত্যাদি নানারকম জিনিসও বিক্রি হয়। মেলার ভিতরে যেমন বই দিয়ে দোকান সাজানো হয়, তেমনই মেলার বাইরেও গরিব দোকানদারেরা তাদের পসরা সাজিয়ে বসে। বইমেলা এখন গ্রামেগজ্ঞে সর্বত্রই ছড়িয়ে গেছে। মূলতঃ লিটল ম্যাগাজিনের জন্যেই এই বাড়বাড়ন্ত। মেলাতে বই কেনার জন্যে যেমন মানুষ ভিড় করে, তেমনই শুধু ঘোরার জন্যেও অনেক মানুষ ভিড় করে। এরকমভাবে বছরে একবার আমরা, সাহিত্যপ্রেমী মানুষেরা, মেতে উঠি এই বইমেলাকে ঘিরে।

অনুপ রায় শিল্পকলা ও কার্টুনের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র যাঁর প্রভা আজও আলোকিত করে রেখেছে ভবিষ্যৎ শিল্পীদের চলবার পথ। বিদ্যাসাগর কলেজ এবং তারপর গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে পড়া শেষ করে আনন্দবাজার পত্রিকায় আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে কর্মজীবনের শুরু। বহু প্রদর্শনী, প্রচ্ছদ সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর তুলির টানে। বর্তমানে অসুস্থ হলেও তুলিকলম থামেনি। 'কার্টুন দল' নামক স্বাধীন শিল্পগোষ্ঠীর অন্যতম বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে কাজ করে চলেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com