[ছবিগুলো ফুল স্ক্রিনে (Full screen mode) দেখুন]
প্রতিমা শিল্পীর নাম কুমারীশ মিস্ত্রি। মিস্ত্রি তাঁর পারিবারিক পদবি, না লোকমুখে প্রচলিত খেতাব, তা খোঁজার চেষ্টা বৃথা। এই মৃৎশিল্পীকে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন ‘প্রতিমা’ গল্পে: “বুড়া মিস্ত্রি কুমারীশ… শীর্ণ খর্বাকৃতি মানুষ কুমারীশ, হাত-পাগুলি পুতুল-নাচের পুতুলের মতো সরু এবং তেমনি দ্রুত ক্ষিপ্র ভঙ্গিতে নড়ে। আর চলেও সে তেমনি খর গতিতে।” তারাশঙ্কর, সমরেশ, সুনীল, সত্যজিৎ……তাঁদের সৃষ্টিতে অমর হয়ে আছেন কিছু মানুষ, যাঁরা দুর্গাপ্রতিমা গড়েন। প্রতিমা আর শিল্পী, দুইয়ের পিছনেই ছায়া ফেলে বাস্তব নানান চরিত্র। মন দিয়ে খুঁজলে সে সব ছায়াকে চিনে নেওয়া যায় কুমারটুলি (Kumartuli) মৃৎশিল্পীর প্রতিমাশিল্পে। কুমারটুলি (কথ্য উচ্চারণে কুমোরটুলি), এই অঞ্চলটি ‘পটুয়াপাড়া’ বা মৃৎশিল্পীদের বসতি অঞ্চল হিসেবে বিখ্যাত। বাঁশ-খড়ের কাঠামো থেকে শুরু করে প্রতিমা তৈরি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপই এখানে গেলে দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষত দুর্গাপুজোর আগে এই অঞ্চল জুড়ে কর্মযজ্ঞ চলতে থাকে। কাজে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীদের দক্ষতাকে মনোযোগ দিয়ে নিরীক্ষণ করলে আপনারা মুগ্ধ হবেনই। কুমোরটুলিতে প্রতিমা নির্মাণের প্রায় ১৭৫ জন মৃৎশিল্পী রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন মহিলা। কুমারটুলিতে দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামবাংলার অনেক মানুষের আগমন হয়। এরা মূলত কৃষিজীবী। পুজোর সময় এরা আসেন উপার্জনের টানেই। কেউ প্রতিমার মাটি তৈরি করেন, কেউ প্রতিমা তৈরির অন্যান্য কাজ করেন। এছাড়াও আসেন মুটে বা বাহকের দল। কুমারটুলি থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে প্রতিমাকে সুনিপুণ দক্ষতায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ এদের।
নেশা ও পেশা ফটোগ্রাফি। ডকুমেন্টারি স্টোরি টেলিং, স্ট্রিট ও ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফিতে আগ্রহী।
2 Responses
চমৎকার…..👏👏👏
Nicely described and beautiful photos