সন্ধের মুখে মুখে নীলকুঠি থেকে বেরলেন স্যামুয়েল ফেডি। কুঠির বাইরে বাঁধা ঘোড়া। রেকাবটা মুছে ঠিকঠাক করে দিলো কুঠির নোকর। পাদানিতে পা রেখে লাফ দিয়ে ঘোড়ায় উঠে পড়লেন ফেডিসাহেব। ঠুকঠুক ক্ষুরের শব্দ তুলে দুলকি চালে চলতে শুরু করল ঘোড়া। এরকমটাই হয় রোজ। কাজের কোনও তাড়াহুড়ো নেই। মাত্র আধমাইল দূরে ঘর। ফেরার সময় এই ধীরেসুস্থে যাওয়াটা বেশ পছন্দ করেন ফেডি সাহেব। অলস ভাবনার অবসর পাওয়া যায় বেশ খানিকটা। যাক, কাজকর্ম সব ঠিকঠাকই চলছে। শুধু একটাই আক্ষেপ মনে। নসীবপুর মৌজার ওই ব্যাদড়া রায়তগুলো। সেই বাপবাপ বলে রাজি হল। মাঝখান থেকে চাবুকের ঘা বিষিয়ে মরে গেল দুজন। দুটো লোক কমে যাওয়া মানে দুটো ম্যানপাওয়ার কমে যাওয়া। নেটিভ ফুলগুলো সেকথা বুঝলে তো? তবে বাকিগুলো বেঁচে গেল কীভাবে সেটা ভেবে অবাক লাগে ফেডির। ওরকম চাবুকের মার, তারপর ঘোড়ার পিছনে বেঁধে চরকিপাক। তারপরেও টিকে গেল ব্ল্যাকিগুলো।
নিজের দেশের সেই প্রবাদটা মনে পড়ে গেল ফেডি সাহেবের ‘আ ক্যাট হ্যাজ নাইন লাইভস’, বেড়ালের নটা জান। এই নেটিভগুলোর ক্ষেত্রে সেটা হান্ড্রেড পারসেন্ট ট্রু। কিন্তু দু দুটো স্লেভ লসের খিচখিচটা কিছুতেই যাচ্ছেনা মন থেকে। এনিওয়ে পাস্ট ইস পাস্ট… মনটাকে অন্যদিকে ঘোরালেন ফেডি। বাবুর্চিকে দিইয়ে বাড়িতে আজ ডাকরোস্ট রাঁধিয়েছেন মিসেস। সঙ্গে দু এক পাত্র শেরি। গ্র্যান্ড ডিনার একেবারে। পা দিয়ে গুঁতো মেরে ঘোড়ার গতি বাড়িয়ে দিলেন ফেডি। একটু দুরেই রাস্তার দুপাশে দুটো বড় বড় গাছ। তারপরেই বাড়ি। গাছদুটোর কাছাকাছি আসতেই ওপরে ডালপালা নড়াচড়ার মৃদু খসখস শব্দ শোনা গেল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মৃদু চাঁদের আলোয় ঘাড়ের পিছনে চকচক করে উঠল কী একটা। মুহূর্তে সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেল ফেডির সামনে।
আমি শুনেছি ইন্ডিয়া নাকি ভূতপ্রেত, বশীকরণ, তন্ত্রমন্ত্রের দেশ। এদেশে সাধু সন্ন্যাসী আর পীর ফকিররা অনেকধরনের উইচক্র্যাফট আর ব্ল্যাকম্যাজিক জানে। আমার মনে হচ্ছে বিশে বাগদী আসলে মানুষ নয়। হি ইজ আ গোস্ট। অ্যান ইভিল পাওয়ার।
নিজের মহলে পালঙ্কে শুয়ে ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখছিলেন নৃপতি রায়। বড় তরফের সব সম্পত্তি কিনে নিয়েছেন তিনি। পায়ের সামনে বসে হাউহাউ করে কাঁদছে বড় ভাই ভূপেটা। মহলে চাকরবাঁদি খাটছে বউদি আর ভাইপো ভাইঝিগুলো। হ্যা হ্যা করে হাসছেন নৃপতি। এইসময় বেমক্কা একটা খোঁচা কোমরে। খোঁচা খেয়ে হাউমাউ করে বিছানায় উঠে বসলেন নৃপতি। সামনে কেদারায় বসা বিশে ডাকাত। দুপাশে দাঁড়ানো মেঘা আর প্রেমচাঁদ ডোম। প্রেমচাঁদের দুহাতে ঝোলানো করালি সরকার আর ফেডি সায়েবের কাটা মুণ্ডু। মাথায় বাজপড়া মানুষের মত বিছানার ওপরে জমে গেছেন নৃপতি রায়। বুঝে উঠতে পারছেন না এটা স্বপ্ন কিনা। চিৎকার করার জন্য মুখ খুলতেই মুচকি হাসল বিশ্বনাথ।
— “চেঁচাতেই পারেন রায়মশাই, তবে কোনও লাভ হবে না। আপনার কুত্তাগুলোকে বেঁধে ঠাকুরদালানে ফেলে রেখেছি। পুরো মহলটা ঘিরে রেখেছে আমার লোকেরা।”
লাফ দিয়ে পালঙ্ক থেকে নেমে বিশ্বনাথের পাদুটো জড়িয়ে ধরলেন নৃপতি-
— “মাফ করুন বিশ্বনাথবাবু! অন্যায় হয়ে গেছে আমার!”
চিবুকে আলতো করে আঙুল ঠেকিয়ে নৃপতির মুখটা তুলে ধরল বিশ্বনাথ।
— “মাফ করার একটা রাস্তাও তো আপনি খোলা রাখেননি রায়মশাই। আমি বারবার মানা করেছিলাম আপনাকে কাজটা করতে। শুনলেন না আপনি। এতগুলো প্রজারায়তের মঙ্গলের চাইতে নীলের দাদনের টাকাটা বড় হল আপনার কাছে।”
বলতে বলতে মুখের চেহারা ধারাল হয়ে উঠল বিশ্বনাথের। প্রেতে পাওয়া মানুষের মতো দুটো চোখ। স্বগতোক্তির মত বিড়বিড় করছিল বিশ্বনাথ।
— “মোবারক আর নরোত্তম…কী অপরাধ ছিল ওদের?…খামোখা মরে গেল বেচারারা…আপনাদের সিন্দুক ভরতে গিয়ে… খামোখা…”
অস্ফুটস্বরে একই কথা বলে চলছিল বারবার।
— “যা করার তাড়াতাড়ি কর বিশে! আমাদের বেরতে হবে এখান থেকে!” পাশ থেকে চেঁচিয়ে উঠল মেঘা।
— “ও, হ্যাঁ” বহুকালের ঘুমের ঘোর কাটিয়ে যেন জেগে উঠল বিশ্বনাথ। চোখ সরাসরি নৃপতি রায়ের চোখে
— “এর সাজা তো আপনাকে পেতেই হবে। আমি ডাকাত তবে আপনার মত জানোয়ার নই। মোবারকদের মত অত কষ্ট দিয়ে মারবনা আপনাকে। মেঘা,”
ইশারা পাওয়ামাত্র খোলা তরোয়াল হাতে সামনে এগিয়ে এল মেঘা।
রাতে খাওয়াদাওয়ার আগে কবুতরের খোপের দরজাগুলো ভাল করে পরীক্ষা করছিলেন খোদাবক্স খান। ভাম আর খাটাশের খুব উৎপাত এদিকটায়। একটু ফাঁক দেখলেই খাঁচা সাফ করে দেবে। প্রায় মিনিট দশেক ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবকিছু জরিপ করে নিশ্চিন্ত হলেন খোদাবক্স। এই সময় “দারোগাসাহেব”, বারান্দার দিক থেকে নিচু গম্ভীর গলায় আওয়াজ। বারান্দায় দাঁড়ানো বিশ্বনাথ বাগদী। সেপাই নিমাইয়ের গলায় সড়কি ঠেকিয়ে রেখেছে একজন। ওর বন্দুকটা পড়ে রয়েছে হাত দশেক দূরে। বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেলেন খোদাবক্স। মাত্র মিনিট দশেক! এরই মধ্যে কী নিঃশব্দে আর অবিশ্বাস্য দ্রুততায় জায়গাটার দখল নিয়েছে এরা। রসুইঘর থেকে খুটখাট বাসন নড়াচড়ার শব্দ ভেসে আসছে। তার মানে বেগমসাহেবাও কিছু টের পাননি। বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে ওঠার আগেই সামনে এগিয়ে এলো বিশ্বনাথ।
— “চিন্তা নেই খানসাহেব, আপনি আমার দুশমন কিন্তু সাচ্চা মরদ। সেই সঙ্গে ইমানদারও বটে। তাই আপনার সঙ্গে লড়তে আসিনি আমি। তবে তিনটে ভেট এনেছি আপনার জন্য।”
বাগানের কোণে কাঁঠালি চাঁপার গাছটার দিকে আঙুল দেখাল বিশ্বনাথ। বিশ্বনাথের আঙুলকে অনুসরণ করে গাছের দিকে তাকালেন খোদাবক্স। নিচের মোটা ডালটায় পরপর ঝুলছে স্যামুয়েল ফেডি, নৃপতি রায় আর করালি সরকারের কাটামুন্ডু। গাছের তলায় অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে চারপাঁচজন।
— “খানা তৈয়ার। জলদি আইয়ে।”
ঘরের মধ্যে থেকে হেঁকে উঠলেন বেগমসাহেবা। সেদিকে আড়চোখে তাকিয়ে মুচকি হাসল বিশ্বনাথ।
— “এখানে কোনও অশান্তি চাইনা আমি। আপনিও সেটা চাইবেন না আশা করি। আপনার সেপাইকে পণ হিসেবে নিয়ে যাচ্ছি আমরা। ক্রোশখানেক বাদে ছেড়ে দেব। হট্টগোল অথবা আমাদের পিছু নেওয়ার চেষ্টা করলে বেঘোরে প্রাণ যাবে ওর। আপনার রাতের খানার সময় হয়ে গেছে। বেগমসাহবা বাইয়ে বেরিয়ে এলে এ অবস্থা দেখে ঘাবড়ে যাবেন বিলক্ষণ। যাই আমি।সেলাম।”
বলেই সাঁৎ করে সামনে থেকে সরে গেল বিশ্বনাথ। সামনে তাকালেন খোদাবক্স। বিলকুল ফাঁকা বাগান চত্বর। উধাও বন্দুকটা, উধাও নিমাই। গাছের ডালে ঝুলন্ত তিনটে নরমুণ্ড! যেন পরিহাস করছে খোদাবক্সকে।
সকাল থেকেই মুখ ভার আকাশের। অবিশ্রান্ত বর্ষণে ধুয়ে যাচ্ছে চারপাশ। ঝপাঝপ কোদাল চালাচ্ছিল কবরখানার কর্মীরা। পাশে একটা ঘোড়ায় আয় টানা গাড়িতে শোয়ানো কফিনটা। পাশে দাঁড়ানো মিসেস ফেডি। পরনে কালো রঙের গাউন আর জাল লাগানো লেডিজ হ্যাট। মাথায় ছাতা ধরে রয়েছে কুঠির একজন কর্মচারী। অঝোরে কেঁদে চলেছেন মেমসাহেব। চারপাশে দাঁড়ানো বেশ কয়েকজন রাজপুরুষ। মিসেস ফেডির কাঁধে হাত দিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তাদের স্ত্রীরা। ভিড় থেকে একটু দূরে ছাতা মাথায় দাঁড়িয়েছিলেন এলিয়ট আর ব্লাকুয়ার সাহেব। যুগপৎ শোক আর বিস্ময়ের ধাক্কাটা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি দুজনের কেউই।
বারান্দার দিক থেকে নিচু গম্ভীর গলায় আওয়াজ। বারান্দায় দাঁড়ানো বিশ্বনাথ বাগদী। সেপাই নিমাইয়ের গলায় সড়কি ঠেকিয়ে রেখেছে একজন। ওর বন্দুকটা পড়ে রয়েছে হাত দশেক দূরে। বিস্ময়ে হাঁ হয়ে গেলেন খোদাবক্স। মাত্র মিনিট দশেক! এরই মধ্যে কী নিঃশব্দে আর অবিশ্বাস্য দ্রুততায় জায়গাটার দখল নিয়েছে এরা।
একটু আগেই শ্মশান থেকে সরাসরি এখানে এসেছেন ওরা।। সেখানে নৃপতি রায় ও করালি সরকারের পরিবারের লোকজনদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে দুজনকে। সবার অভিযোগ একটাই। সারাজীবন কোম্পানির প্রতি অনুগত থেকেছেন ওরা। প্রতিবছর খাজনা দিয়েছেন নিয়ম মেনে। তার বদলে পাওনা শুধু নিরাপত্তাটুকু, সেটাও দিতে পারল না কোম্পানি বাহাদুর। তাহলে আর অমন আনুগত্যের দাম কি? তার চেয়ে বিশের পায়েই নজরানা দেওয়া ভাল। তাতে অন্তত পৈতৃক প্রাণটুকু তো বাঁচবে। কানে গরম সিসে ঢালার মত শুনতে লাগছিল কথাগুলো দুজনের।
— “মিঃ ব্লাকুয়ার”
এলিয়ট সাহেবের ডাকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন ব্লাকুয়ার। ওর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছেন এলিয়ট। অদ্ভুত একটা দৃষ্টি দুচোখে। আদ্যোপান্ত হতাশা কণ্ঠস্বরে।
— “আমি শুনেছি ইন্ডিয়া নাকি ভূতপ্রেত, বশীকরণ, তন্ত্রমন্ত্রের দেশ। এদেশে সাধু সন্ন্যাসী আর পীর ফকিররা অনেকধরনের উইচক্র্যাফট আর ব্ল্যাকম্যাজিক জানে। আমার মনে হচ্ছে বিশে বাগদী আসলে মানুষ নয়। হি ইজ আ গোস্ট। অ্যান ইভিল পাওয়ার। নইলে একরাতের মধ্যে তিন তিনজনকে বিহেড করে কোতোয়ালির নাকের ডগায় তাদের মাথাগুলো ঝুলিয়ে রেখে চলে গেল। তাও আবার খুডাবক্সের মত জাঁদরেল পুলিশ অফিসারের সামনে। আর আমরা কিছু করতে পারলাম না। অ্যাত্ত ফৌজ, সিপাহী, পাইক, বরকন্দাজ…অল ইউজলেস! ওদের প্ল্যান আর মুভমেন্টের অ্যাডভান্সড কোন ইনফরমেশনই পেলাম না আমরা। আমাদের ডেরায় ঢুকে আমাদেরই মুখে জুতো মেরে চলে গেল। একে উইচক্র্যাফট ছাড়া আর কিই বা বলতে পারি আমি। ড্যাম ইট!”
তীব্র হতাশায় ভিজে মাটিতে সজোরে একটা লাথি মারলেন এলিয়ট। মৃদু হেসে সহকর্মীর কাঁধে হাত রাখলেন ব্লাকুয়ার,
— “কাম ইয়োরসেলফ মাই ফ্রেন্ড। লেট মি এক্সপ্লেন দ্য হোল থিং। বিশে ডেকয়েটের অ্যাকটিভিটির মধ্যে আমি সুপারন্যাচারাল কিছু দেখছি না। সেটাকে একটু খুঁটিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবে তুমিও। সেই মেগাইয়ের খুন আর আটঘড়ার জমিদারবাড়ির পর থেকে আর সেরকম কোনও রিমারকেবল অ্যাকটিভিটিজ নেই ওর। এই জেলার পাশাপাশি বাকি জেলাগুলোতেও ডাকাতি প্রায় বন্ধ বললেই চলে। হোয়াট ডাজ ইট প্রুভ? দ্য আনসার ইজ ভেরি সিম্পল। কালো, দমন আর মানসুরেদের দলকে খতম করে বিশের নেটওয়ার্কের কোমর ভেঙে দিতে পেরেছি আমরা। প্রত্যেকটা ডিসট্রিক্টের রিভার অ্যান্ড ল্যান্ড বর্ডারগুলো গার্ড দিচ্ছে কোম্পানি সেপয়েস অ্যান্ড গার্ডস। প্লাস জমিনডার, পাঁচু সর্দার আর ওপরগস্তিদের ফোর্সও রয়েছে ওদের সঙ্গে। কদিন আগে বিষমকুল গড়ের বিশের ওই ডেনটা রেড করা হলও বটে বাট বিশে ওয়াজ নট ফাউন্ড। এতদিনের সেফ শেল্টার ছেড়ে পালাতে হয়েছে ওকে। আই অ্যাম শিওর এভাবেই ওয়ান আফটার অ্যানাদার শেলটার চেঞ্জ করতে হবে ওকে। আর যত সেটা হবে ততই এরিয়া ছোট হয়ে আসবে ওর। অন দি আদার সাইড দেয়ার ওয়াজ আ মেজর ফল্ট ফ্রম আওয়ার সাইড অলসো। আমরা ভেবেছিলাম আমাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিশে। ভাবতেও পারিনি এভাবে আমাদের হেড কোয়ার্টারে এসে স্ট্রাইক করতে পারে ও। বাট বিশে ইজ ব্রেভ লাইক আ টাইগার অ্যান্ড কানিং লাইক আ ফক্স। ও কিন্তু ঠিক ধরতে পেরেছিল আমাদের এই লুপহোলস আর উইকনেসটা। অ্যান্ড স্ট্রাইকড ইমিডিয়েটলি। ইন দিস সিচুয়েশন আমাদের কাজ হবে হেড কোয়ার্টারের সিকিওরিটি আরও স্ট্রং করা আর বিশেকে নদীয়া ডিসট্রিক্টের মধ্যে আটকে রাখা। দিস ইজ আওয়ার লেসন ফ্রম ইয়েসটারডে’স ম্যাসাকার। আর লেসনটাকে যদি আমরা কাজে লাগাতে না পারি দেন আয়াম কনফারমড, আজ হোক বা কাল, বিশে আমাদের জালে পড়বেই।”
শোনার পর একটু স্বাভাবিক হল এলিয়টের চোখমুখ। কথাবার্তার মধ্যে ভেসে আসা পাদ্রীসাহেবের গলা। পাঠ শুরু করছেন বাইবেল থেকে। দড়িতে বেঁধে কবরের গর্তে কফিনটা নামিয়ে দিচ্ছে কর্মচারীরা। দ্রুতপায়ে সেদিকে এগিয়ে গেলেন ব্লাকুয়ার আর এলিয়ট।
জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তর কলকাতার পুরোনো পাড়ায়। বহু অকাজের কাজী কিন্তু কলম ধরতে পারেন এটা নিজেরই জানা ছিল না বহুদিন। ফলে লেখালেখি শুরু করার আগেই ছাপ্পান্নটি বসন্ত পেরিয়ে গেছে। ১৪২১ সালে জীবনে প্রথম লেখা উপন্যাস 'দ্রোহজ' প্রকাশিত হয় শারদীয় 'দেশ' পত্রিকায় এবং পাঠকমহলে বিপুল সাড়া ফেলে। পরবর্তীতে আরও দুটি উপন্যাস 'জলভৈরব' (১৪২২) এবং 'বৃশ্চিককাল' (১৪২৩) প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে পুজোসংখ্যা আনন্দবাজার এবং পত্রিকায়। এছাড়া বেশ কিছু প্রবন্ধ এবং দু চারটি ছোটগল্প লিখেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা আর লিটিল ম্যাগাজিনে। তার আংশিক একটি সংকলন বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে 'ব্যবসা যখন নারীপাচার' শিরোনামে। ২০১৭ সালে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার।
3 Responses
আচ্ছা এমনটা যদি এখন সত্যি হতো!
ভালো লাগছে। অনবদ্য। পরের পর্বের অপেক্ষায়।
একটি অনুরোধ, বানানের দিকে যদি একটু নজর দেওয়া হয় তাহলে আরও ভালো লাগবে। বিশেষত কিছু স্থানে দীর্ঘ ঊ এর স্থানে হ্রস্ব উ রয়েছে।
Next part please