কুয়াশা আর জোনাকিরা
যখন মাঝরাতে দূরগামী ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে
একটা গোটা সিগারেটে পুড়ে যাবার আবেশটা
আলাপ হয়ে যেত অন্ধকারের সাথে
সেই তেমন কোনও যুগ বা তেপান্তর থেকে
তোমার সাথে পরিচয়
এটা ঠিক আলোকবর্ষ দিয়েও জরিপ করার নয়।
ধূমপান সতর্কীকরণের সুদীর্ঘ অনুশাসন পেরিয়ে
উন্মুক্ত লোভীর মতো প্যাকেটের বাঁধন খোলার
ক্ষিপ্রতায় একের পর এক মাছ কেটে চলা
ছেলেটার সাথে
আমার এখানেই একমাত্র মিলের প্রেক্ষাপট।
সময় জানে ঘড়ির দোসর একরকমের বিষ
ধোঁয়া ছাই ভরা বিষণ্ণ পাত্র
প্রত্যাখ্যান বা প্রতীক্ষার।
এসব বলেও না বলা প্রেমের মতো
অন্তহীন অভ্যেস।
কোয়ারেন্টাইন
বারান্দাটা নিজের বাড়িতেই একঘরে।
মিশতে চায় না, নাকি মিশতে পারে না!
এটা ভেবে দেখার অবসর নেই তার।
অথচ খোলা মাঠের মতো ফাঁকা সময়।
সময় শব্দটাতেই অবশ্য আপত্তি তার।
সময় বলে কিছু হয় না। আসলে একটা অদৃশ্য নদী কিছুটা পথ পেরিয়ে পেছনে ফিরে দেখে
কচুরিপানার ডালে বসে অন্যমনস্ক তিনটে কাক।
বা সাতটা আটটা দশটা। সংখ্যাটা অর্থহীন।
কিছু আছে রঙ ভালোবাসে, কিছু অন্ধকার।
বারান্দাটার অবশ্য সংখ্যা মনে রাখার অভ্যেস নেই। লেভেলক্রসিং ছেড়ে কটা ট্রেন চলে গেল,
কতজন মানুষকে দেখে ইচ্ছে করে তাকিয়েই থাকি বা পুকুরের পাশে জামরুল গাছটায়
ক‘টা আধখাওয়া পাখিদের ফল
ভেসে উঠল জলে। সকাল থেকে রাত, ভোররাত বা রাতভোর।
কখনোই নয়।
*ছবি সৌজন্য: Saatchi Art
সত্তরের দশকের শেষের দিকে কলকাতায় জন্ম অভিরূপের। স্কুলজীবন থেকেই বাংলা সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক। কলেজে বাংলা অনার্স নিয়ে পড়ার পাশাপাশি পুরোপুরি সাহিত্যে মনোনিবেশ। কিছুদিন ফ্রিলান্স সাংবাদিকতাও করেছেন। এরপরেই ঢুকে পড়া টেলিভিশনের জন্য স্ক্রিপ্ট লেখার আঙিনায়। সম্পূর্ণ আলাদা এক পরিবেশ এবং প্রস্তুতির সঙ্গে পরিচয়। একইসাথে চলতে থাকে গল্প-কবিতার পালা। দেশ, এই সময়, আজকের সম্পূর্ণা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু লেখা।