banglalive logo
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

ছোটদের গল্প: ঢণ্ঢু চাঁদ

Bookmark (0)
ClosePlease login

No account yet? Register

dowhill school Kurseon

আমি তখন হোস্টেলে। কার্সিয়াং থেকে কয়েশো ফুট উঠে গিয়ে ডাওহিল, সেখানে আমাদের বোর্ডিং স্কুল; পাহাড়ের গায়ে প্রায় একশো বছরের পুরনো স্কুল। পাহাড়ের পশ্চিম ঢালে অবস্থিত বলে সূর্যোদয় দেখা না গেলেও সূর্যাস্তটা হতো অপূর্ব। স্কুলের পশ্চিম দিক দিয়ে পাহাড়ের ঢাল নেমে গেছে। দূরে ওই নীচে বালাসন নদীর উপত্যকাপরিষ্কার দিনে সরু রুপোলি ফিতের মতো বালাসনকেও চিক চিক করতে দেখা যায়। তার পশ্চিমে আবার পাহাড় উঠে গেছে, তার গায়ে পাঙ্খাবাড়ি রোড এঁকে বেঁকে চলেছে। শীতকালে দেখা যেত টংলু পাহাড়ে বরফ পড়া শুরু হল। তার ওপারে নেপাল। আবার সোজা উত্তর দিকে ঘুম পাহাড়, আর আকাশ পরিষ্কার থাকলে রাজকীয় মর্যাদায় দাঁড়িয়ে আছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। 

স্কুলে একটা অ্যাঙ্গলিকান চার্চ ছিল। পুজো আচ্চা কিছু হতো না, একটু অযত্নেই পড়ে থাকত বেচারি। সেখানে আমরা লুকোচুরি খেলতাম। তবে আরও ভালো লুকোচুরি খেলার জায়গা হলো, চার্চের পেছন দিকে ধুপ্পি গাছ আর ফার্নের জঙ্গলের ভেতর একটা ছোট্ট ঝরনাওখানে বলে ঝোরা। বছরের পর বছর ধরে জল বয়ে বয়ে মাটিতে খাড়াই দশ বারো ফুট গভীর হয়ে ছোটখাটো একটা গিরিখাত হয়ে গেছে। এইখানটায় পাহাড়ে ঢাল কম, এঁকে বেঁকে ঝোরার জল তিরতির করে বয়ে চলেছে, আর তার অজস্র শাখাপ্রশাখা, খাড়া গভীর ফাটলের মতো হয়ে ঘন জঙ্গলের ভেতর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে। শুকনো থাকলে তার ভেতর নেমে লুকোচুরি খেলার মজাই আলাদা। বর্ষাকালে জল থাকলেও সে খুব বেশি না, পায়ের পাতা ডোবে শুধু। তবে বছরের বেশিরভাগ সময়ে জোঁক থাকত প্রচুর। একবার নেমে উঠে আসলে অন্তত চার পাঁচটা জোঁক বেরোত প্যান্টের ভেতর থেকে। 

পাহাড়ে শীতের পর প্রথম স্কুল খোলে মার্চ মাসে। প্রথম দিন হোস্টেলে এসে মনমরা হয়ে ঘুরছি। এই প্রথম মা বাবাকে ছেড়ে থাকব, বারো বছরের বালকের বুকের ভেতর একটু গুড় গুড় করে। এমন সময় ডেভলিন ডবস এসে গাঁক‌ গাঁক‌ করে  আলাপ করলো, “নিউ ফেলো? কাম অন, লেট মি শো ইউ অ্যারাউন্ড।খেলার মাঠ, প্যাভিলিয়ন, ডাইনিং হল, লাইব্রেরি, সব দেখিয়ে, চার্চের দিকটায় যেতেই, “য়ো‌ ম্যালি, হে রানা!” বলে এক হাঁক। দেখি আরও দুটি ছেলে, আলাপ করিয়ে দিল, মালহোত্রা আর রানা। মালহোত্রা, বা ম্যালি ছিপছিপে লম্বা, শুনলাম স্কুল টিমে ক্রিকেট খেলে, পেস বোলার। আর রানার গলায় গিটার ঝোলানো দেখেই বুঝে গেছি তার নেশা কী।

কথায় কথায় জানা গেল ডেভলিনরা কয়েক পুরুষ ধরে এই অঞ্চলের বাসিন্দা; বাপ ঠাকুর্দা চিরকালই চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত। স্বাধীনতার পরেও এই দেশকেই আপন করে নিয়েছেন। ম্যালির বাবা বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সে আছেন, বদলির চাকরি। আর রানাকে তো দেখেই বোঝা যায়, পাহাড়ি ক্ষত্রিয়। কোন এক সময়ে তাদের পূর্বপুরুষ নাকি নানা সাহেবের পাশে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করেছেন। সেপাই বিদ্রোহের পতনের পর, নানা সাহেব যখন পরিবার পরিজন নিয়ে নেপালে পালিয়ে আসেন, তখন তিনি পাশে থেকে সাহায্য করেন। ওদের বাড়িতে সেই আমলের কিছু মোহর আর অস্ত্রশস্ত্র এখনও আছে। 

তবে“, ডেভলিন বললো, “দে লস্ট দেয়ার প্রাইজ ড্যাগার।” 

কী? খুকরি?” আমি জিজ্ঞেস করি

না, মারাঠা খঞ্জর। নানা সাহেব নিজের হাতে নাম খোদাই করে দিয়েছিলেন।ডেভলিন বলে। 

চারজনে মিলে চার্চ তার পেছন দিকের জঙ্গল, ঝোরা, এই সব দেখছি তখন। ঝোরার পেছন দিকে পাহাড়ের ওপর দিয়ে একটা কালভার্ট পেরিয়ে পায়ে হাঁটা পথ চলে গেছে, স্কুলের হাসপাতালের দিকে। সেখানে একটা ডিয়ার পার্ক, জাল দিয়ে ঘেরা বিশাল জায়গা জুড়ে কয়েকটা হরিণ, চমরী গাই, এই সব ছাড়া আছে।

এক সময়ে ম্যালী বলে উঠলো, “এখানে ভুত আছে, জানিস তো?” 

শুনে আমি হ্যা হ্যা করে হেসে উঠলাম। 

ডেভলিন বললো, “হ্যাঁ, অন্ধকার হয়ে গেলে একা আসবি না।” 

আমি হাসি থামিয়ে বললাম, “মানে!?”

ডেভলিন বললো, “হ্যাঁ রে, জানি, প্রথম প্রথম এসে বিশ্বাস হবে না।

রানা আবার এই সময়েই গিটারে পিড়িং পিড়িং করে কর্জ সিনেমার সেই সুরটা ধরল, “এক হাসিনা থি।

কার ভূত?” আমি জিজ্ঞেস করি

ম্যালি বলে, “আরে, একটা হলে তো হতো! গাদা গাদা ভুত। এই চার্চ, পেছনের জঙ্গল, ওই ঝোরা বরাবর পাহাড় ধরে উঠে যা, কালভার্ট পেরিয়ে ডিয়ার পার্ক পর্যন্ত, কিলবিল করছে ওরাই।

ম্যালির কথা শুনে মনে হলো ফাজলামি করছে।

কিন্তু ডেভলিন গম্ভীর হয়ে বলে চলল, “অনেক অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটেছে এখানে। প্রথম ঘটনা তো আমার দাদুর মুখেই শোনা। তারা যখন ছাত্র, সেই সময় থকেই মিস্টার পেকহ্যামের আত্মা দেখা দিতে শুরু করেন। মিস্টার পেকহ্যাম হলেন স্কুলের প্রথম হেডমাস্টার। চার্চের উত্তর দিকেই ওঁর সমাধি। তারপর একবার একটি ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ঝোরার ভেতর পড়ে গিয়ে। তাকেও দেখতে পায় অনেকে। আরও অনেক ঘটনা আছে। সব এক এক করে জানতে পারবি।

ম্যালিও এবার গম্ভীর হয়ে বললো, “অনেক সময় শোনা গেছে, ছেলেরা সন্ধ্যার দিকে ঐদিকে খেলতে গিয়ে বেমালুম গায়েব হয়ে গেছে। হয়তো দু তিন দিন পর পাওয়া গেল, কখনও সপ্তাহ খানেক পরে। শুকনো মুখ, আলুথালু চেহারা। জিজ্ঞেস করলে বলে, এই তো সবে আধ ঘণ্টা হলো খেলছি!”

রানা এবার মুখ খোলে, “শুধু কাকা ফেরেনি।

কাকা?!” আমি বলি

ডেভলিন বলে, “চল, অন্ধকার হয়ে আসছে। ফিরতে ফিরতে বলি।

mysterious jungle
অনেক অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটেছে এখানে। প্রথম ঘটনা তো আমার দাদুর মুখেই শোনা।

আমি যে সময়ের কথা বলছি, অর্থাৎ আশির দশকে, তারও প্রায় চল্লিশ বছর আগে, রানার এক কাকা এই স্কুলেই পড়তে আসে। তখনো ব্রিটিশ শাসন চলছে। স্কুলের ব্যাজে অশোক চক্রের বদলে ইংরেজদের রাজমুকুট খোদাই করা। রানার কাকা তখন আমাদের মতোই বালক, বা সবে কৈশোরে পা রেখেছে। খুব সুন্দর ছবি আঁকার হাত নাকি। ম্যালি বললো, “আর্ট হলে দেখিস তার পেন্টিং, রবি ঠাকুরের সঙ্গে নেপালের আদিকবি ভানুভক্ত। এখনও রাখা আছে।” 

তা সেই কাকা নাকি হঠাৎ একদিন হোস্টেল থেকে উধাও। অনেক খোঁজা হলো। পুলিশ, স্থানীয় লোক, স্কুলের ছেলেরা, সবাই দল বেঁধে অনেক খুঁজল, কিন্তু পাওয়া গেল না। মুশকিল হলো এই যে, ঠিক সেই রাত থেকেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। কয়েক জায়গায় ধসও নামে।এখন ডিয়ার পার্ক দিয়ে হসপিটাল যাবার যে রাস্তাটা দেখছিস, অনেক আগে এটা ছিল না, পুরনো রাস্তাটা সেই সময়ে ধস নেমে নষ্ট হয়ে যায়।ডেভলিন বলে।

স্কুলে এক এক করে চমৎকার দিন কেটে যায়।  দেখতে দেখতে গরমের ছুটি এসে গেল। ছুটির শেষে স্কুলে ফিরে এসে দেখি, একজন ভলান্টিয়ার স্টাফ এসেছেন। নাম মিস্টার ম্যাকিন্টায়ার। তিনিও নাকি এই স্কুলেরই ছাত্র ছিলেন এককালে। স্বাধীনতার কিছু পরে উনি বাবা মার সঙ্গে কেনিয়া চলে যান। তারপর নানান জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছেন। এখন কী খেয়াল হয়েছে, পুরনো স্কুলে এসেছেন ভলান্টারি সার্ভিস দিতে। বিভিন্ন ক্লাসে টিচারদের কোনো সাহায্য লাগলে হাজির থাকবেন। লাইব্রেরির বইয়ের ক্যাটালগ বানাবেন। এইসব আর কি।

ম্যাকিন্টায়ার আসাতে স্কুলে যেন একটা অন্য রকম সাড়া পড়ে গেল। একা মানুষ, টিচার্স কোয়ার্টারে না থেকে স্কুলের পেছনেই একটা ছোট্ট কেবিনে থাকেন। সারাদিন স্কুলের ছাত্রদের সঙ্গে খেলেধূলো করে আর গল্প করে কাটান। আর সে কতরকম গল্প; নানান দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর কত যে অভিজ্ঞতা! আমরা তো প্রায় সবাই ওঁর ন্যাওটা হয়ে উঠলাম। তার ওপর লোকটার নাকি পুরনো জিনিসপত্র সংগ্রহ করার বাতিক। ঘরের মধ্যে ছোট্ট শো কেসে বিভিন্ন দেশের পুরনো দিনের পয়সা, নানা রকমের ছুরি, যুদ্ধের মেডেল, মূর্তি, এই সব। তার মধ্যে একটা বেশ পুরনো হাতির দাঁতের বাঁটওলা ছুরি। বাঁটের ওপর কাঁচা হাতে কেউ দেবনাগরী হরফে খোদাই করে দিয়েছে, “ঢণ্ঢু চাঁদ যেমন পেরেক দিয়ে, বা আর একটা ছোট ছুরি দিয়ে কোন বাচ্চা ছেলে এখানে ওখানে নিজের নাম খোদাই করে রাখে, ঠিক তেমন। না জানি অজানা অতীতের কোন দুর্গেশনন্দনের কাজ। কিন্তুঢণ্ঢু চাঁদ“!  আবার কী? ম্যালি বলল, “কেন ভাই, শ্যামা চাঁদ হতে পারে, কালা চাঁদ হতে পারে, আর ঢণ্ঢু চাঁদ হতে পারে না?”

কান্ডটা ঘটল, একদিন আর্ট ক্লাসে। সেদিন ম্যাকিন্টায়ার সাহেব মিস্টার গোস্বামীকে সাহায্য করছিলেন। নতুন অনেক আঁকার সরঞ্জাম এসেছে কলকাতা থেকে, দুজনে মিলে সব গুছিয়ে রাখছিলেন। আমরা একমনে ছবি আঁকছি, আমার পাশে বসে রানা ঘস ঘস করে কাগজের ওপর প্যাস্টেল ঘষে চলেছে। কি আঁকছে ভগবান জানে, কিন্তু মুখে চোখে ভীষণ একাগ্র ভাব। মিস্টার গোস্বামী বাইরে কোথাও ছিলেন। ফিরে এসে ক্লাসের ভেতর ঘুরে ঘুরে সবার কাজ দেখতে লাগলেন। চলতে চলতে রানার আঁকা দেখে হঠাৎ থমকে গিয়ে বিড় বিড় করে বললেন, “বাঃ, কি অপূর্ব, দারুণ এক্সপ্রেশনিস্ট কম্পোজিশান! কিন্তু কীসের এত বেদনা?” 

তারপর ধীরে ধীরে রানার কাছে এসে কাঁধে হাত রেখে ডাকলেন, “রানা, রানা, এই ছেলে!”

রানা যেন এতক্ষণ ঘোরের মধ্যে ছবি এঁকে চলেছিল, হঠাৎ হুঁশ ফিরে বললো, “হাঁঃ, ইয়েস স্যার?” 

তুই কী আঁকছিস বাবা?” স্যার প্রশ্ন করেন।

হাঁহ?” রানা কেমন ফ্যাল ফ্যাল করে নিজের আঁকা ছবির দিকে চেয়ে থাকে, “আই ডোন্ট নো স্যার!”

তা সেই কাকা নাকি হঠাৎ একদিন হোস্টেল থেকে উধাও। অনেক খোঁজা হলো। পুলিশ, স্থানীয় লোক, স্কুলের ছেলেরা, সবাই দল বেঁধে অনেক খুঁজল, কিন্তু পাওয়া গেল না। মুশকিল হলো এই যে, ঠিক সেই রাত থেকেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। কয়েক জায়গায় ধসও নামে।এখন ডিয়ার পার্ক দিয়ে হসপিটাল যাবার যে রাস্তাটা দেখছিস, অনেক আগে এটা ছিল না, পুরনো রাস্তাটা সেই সময়ে ধস নেমে নষ্ট হয়ে যায়।ডেভলিন বলে।

এতক্ষণে আমরাও উঠে উঁকিঝুঁকি মারছি, কি ব্যাপার বোঝার চেষ্টা করছি। মিস্টার ম্যাকিন্টায়ার ওঁর স্বভাবসিদ্ধ হৈ হৈ মেজাজে, “হোয়াটস আপ ফেলাস“, বলতে বলতে আসতে গিয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন। 

আমি তো পাশেই ছিলাম, দেখলাম অদ্ভুত এক ছবি। আকাশের ঘন কালো অন্ধকার মেঘ যেন চারদিক গ্রাস করছে, ঝুপ ঝুপ বৃষ্টির নিচে বার্চ পাইনের জঙ্গলে একটা পাহাড়ি ছেলে, তার মুখে চোখে এক অবিশ্বাস্য বেদনা ফুটে উঠেছে। হাজার দুঃখ, বিপুল হতাশার এক চাপা ক্রন্দন উথলে উঠছে সে মুখে। অমন ছবি আমি কখনও দেখিনি। অমন মুখের ভাব কেউ ফোটাতে পারে বলে আমার জানা ছিলো না। 

এই সময়ে ঢং ঢং করে পিরিয়ড শেষের ঘণ্টা পড়ল, সেদিনের মতো স্কুল শেষ। আমরাও ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে এলাম।

পরদিন শনিবার, ছুটি। আমরা হেডমাস্টারের অফিস থেকে এক্সিট পাস নিয়ে কার্সিয়াং টাউনে গেলাম। সিনেমা দেখা, তিব্বতী হোটেলে মোমো চাও চাও খাওয়া, এই সব করেই সারাদিন হৈ হৈ করে কেটে গেল। পরদিন সকালে ম্যালির ধাক্কাধাক্কির চোটে ঘুম ভাঙল। ফিস ফিস করে বললো, “আয়, দেখ রানার কান্ড।গিয়ে দেখি রানা বিছানায় চাপ ঘুমোচ্ছে। ডেভলিন ওর খাটে চিন্তিত মুখে বসে রয়েছে, আর মেঝেতে ছড়ানো ছিটনো এক গাদা কাগজে গুচ্ছের ছবি আঁকা। সেই অদ্ভুত ধরনের ছবি। অন্ধকার বাদলঝরা আকাশের ঘেরাটোপের নিচে বার্চ পাইনের বন, সেখানে কোনটাতে একটা ছেলের হাতে একটা ছুরি, কোথাও একটা ছেলে আরেকটাকে ধাক্কা মেরে খাদের নীচে ফেলে দিচ্ছে, কোথাও একটা পাহাড়ি ছেলে খাদের নীচে হাড়গোড় ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে, কোথাও ছেলেটা কাদায় ডুবে যাচ্ছে, এই সব।  ম্যালি বলল, “রানাটা এরকম খুন খারাপি টাইপ কবে থেকে হলো বলতো?”

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ডেভলিন বলল, “সারারাত এই সব করেছে, এখন মড়ার মতো ঘুমুচ্ছে। কি করবি? সিস্টার তামাংকে খবর দিবি?” সিস্টার তামাং আমাদের হসপিটালের নার্স। দরকার হলে ওঁর কাছেই ছুটতে হয়।

আমি বললাম, “এখন তো শান্ত ভাবে ঘুমুচ্ছে। ঘুমুতে দে। ছবিগুলো চল বরঞ্চ ম্যাকিন্টায়ারকে দেখাই। বা মিস্টার গোস্বামী কে। ওরা যদি কিছু বলতে পরে।

ম্যাকিন্টায়ার কাছেই থাকে, তাই ওর কাছেই যাওয়া স্থির হলো। তিনি দরজা খুলে আমাদের দেখে একগাল হেসে, “হে গাইজবলেই, ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন পাংশু হয়ে গেলেন। ওনার ফর্সা গোলাপী মুখ মুহূর্তের মধ্যে ছাইয়ের মতো হয়ে গেল। তারপর উনি তড়বড় করে কী সব বলে, “গট্টা রান, গট্টা রান, ওকে, সি ইউ লেটারবলে মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলেন। 

আমরা হতভম্ব হয়ে খানিক দাঁড়িয়ে থেকে, একটু এদিক ওদিক ঘুরে, মনমরা হয়ে ডরমিটরিতে ফিরে এলাম। এসে দেখি রানা উঠে পড়েছে। শুধু তাই নয়, কিছুই হয়নি এমন ভাব করে গিটারেহোটেল ক্যালিফোর্নিয়াবাজাচ্ছে। আমাদের দেখে বলল, “কি রে, সক্কাল সক্কাল? জগিং করে এলি? ডাকলি না, রাস্কল!” 

পরের সপ্তাহটা গতানুগতিক ভাবে কেটে গেল। শুধু ম্যাকিন্টায়ারের দেখা নেই। শুনলাম উনি নাকি কয়দিনের জন্য শিলিগুড়ি গেছেন, বিশেষ কাজে। তারপর এল সেই ভয়ঙ্কর দিন!

সপ্তাহের শেষদিন শুক্রবার সকালে অ্যাসেম্বলিতে হেডমাস্টার মশাই ঘোষণা করলেন, দুর্ভাগ্যবশতঃ মিস্টার ম্যাকিন্টায়ারকে অত্যন্ত জরুরি কাজে দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে। উনি আর আমাদের এখানে থাকতে পারবেন না। গতকাল সন্ধ্যে বেলা উনি শিলিগুড়ি থেকে ফিরে এসেছেন সব কিছু পাকাপাকি করে। রবিবারই উনি চলে যাবেন। তাই আজ সন্ধ্যে বেলায় ওঁর অনারে স্পেশাল ডিনারের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। 

খবরটা শুনে তো সবাই খুব মুষড়ে পড়ল। আমাদের সবার সঙ্গে খুব সত্যি খুব মিশে গিয়েছিলেন ভদ্রলোক। যাইহোক, সেদিন রাত্রে পোলাও মাটন কারি জমল ভালই। পরদিন ছুটি, অনেক রাত অবধি গপ্পো করে সবাই ঘুমুতে গেলাম। 

কতক্ষণ ঘুমিয়েছি খেয়াল নেই, হঠাৎ ভীষণ ধাক্কাধাক্কিতে ঘুম ভেঙে গেলো। দেখি ম্যালি।কি রে?” আমি বলি।

আরে, দেখ, ওটা কে? ম্যাকিন্টায়ারের দরজার সামনে।

আমি প্রথমে কাউকে দেখতে পেলাম না। ইতিমধ্য ম্যালি গেছে ডেভলিনকে জাগাতে। তারপর হঠাৎ দেখলাম, একটা আমাদের বয়সী ছেলে ম্যাকিন্টায়ারের কেবিনের দেওয়াল বেয়ে উঠছে। দেওয়াল বেয়ে কি কেউ উঠতে পরে? কিন্তু কি অদ্ভুত বিভৎস সেই ওঠার ধরন, যেন মানুষ নয় কাঁকড়া। হাত পায়ের জোড়গুলো কেমন কোনাকুনি বাঁকা বাঁকা। ইতিমধ্য ডেভলিনও এসে হাজির। ধবধবে চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখলাম সেই ছেলেটা, বা প্রাণীটা, তর তর করে কেবিনের ঢালু টিনের ছাত বেয়ে সোজা ওপরে উঠে গেল। তারপর হঠাৎ থেমে, মাথাটা ধীরে ধীরে পুরো পেছন দিকে ঘুরিয়ে সোজা ঠিক আমাদের দিকে তাকাল। আমার বুকের ভেতরটা ধড়াস করে উঠল, তো সেই মুখ। রানা তো এই মুখের ছবিই এঁকেছিল। হঠাৎ মনে পড়লরানা কই, রানা?”

thriller
আমার বুকের ভেতরটা ধড়াস করে উঠল।

এমন সময়আঁআঁআঁকরে রানার গলার আওয়াজ পাওয়া গেল। আমরা দৌড়ে গিয়ে ওর বিছানার কাছে গিয়ে দেখি, সে ঘুমোতে ঘুমোতে ছটফট করছে। যেন তার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমরা ডাকলাম, “রানা, রানা!” রানা হঠাৎ একটা বড় নিশ্বাস ফেলে পাস ফিরে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। আমরা আবার দৌড়ে জানালার কাছে এলাম, কিন্তু সেই প্রাণীটাকে আর দেখতে পেলাম না।

জানালার পাশে অনেক্ষণ বসে রইলাম তিনজনে। মাঝে মাঝেই বাইরে এদিক ওদিক দেখতে লাগলাম, যদি সেটাকে আবার দেখা যায়। কিন্তু না। মাঝে মাঝে দেখে নিচ্ছিলাম, রানা অঘোরে ঘুমোচ্ছে। নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বলতেই রাত কাবার হয়ে গেলো, ভোরের আলো ফুটল। ম্যালি বললো, “যাই, রানাকে ওঠাই।একটু পরেই চিৎকার, “এই, সিস্টার তামাং কে খবর দে। এর তো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।” 

অন্যান্য দিন স্কুল হাসপাতাল থেকে একজন নার্স রোজ সকালে একবার রাউন্ড দিয়ে যান। কিন্তু আজ শনিবার। তাছাড়া রানা যেমন জ্বর আর নিঃসাড়ে ঘুমোচ্ছে, ওকে হাসপাতালেই নিয়ে যেতে হবে। আমরা কয়েকজন মিলে ওকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে গেলাম। শিবাজী আর মলয় এল সঙ্গে। অনেক বেলা অবধি হাসপাতালেই রইলাম। শিবাজী মাঝখানে গিয়ে আমাদের জন্য প্যাকড টিফিন এনে দিল স্কুল প্যান্ট্রি থেকে। রানার জ্বর কমলেও, সে ঘুমোচ্ছে এখনও। হাসপাতালের মেট্রন মিসেস গুরুং মাঝে মাঝেই আমাদের বোঝাচ্ছেন যে, “এবার তোমরা এসো।এমন সময় দেখি মলয় ছুটতে ছুটতে আসছে, “শিগগির চল, শিগগির চল!” 

কী হয়েছে?” আমরা জিজ্ঞেস করি

উত্তরে মলয়ম্যাকিন্টায়ারবলে হাত পা চিতিয়ে, ঘাড় এলিয়ে, জিভ বের করে, যা একখানা পোজ দিলো, তার একটাই অর্থ হয়।

মানে?!” আমরা বলি সমস্বরে।

অক্কা। পুলিশ এসেছে।মলয় বলে।

ব্যস, আর কিছু বলার দরকার নেই। দৌড়, দৌড়। স্কুলে এসে দেখি হুলুস্থুল ব্যাপার। ম্যাকিন্টায়ারের কেবিন পুলিশ আর মাস্টার মশাইরা ঘিরে রয়েছেন। আর চারদিকে ছেলেরা জটলা পাকিয়ে ভিড় করে রয়েছে। ব্যাপার যা শুনলাম তা হলো, সকালে ম্যাকিন্টায়ার ডাইনিং হলে আসেননি বলে বেয়ারা সন্তোষ দাজু এসে দরজার বাইরে খাবার রেখে যায়। তারপর লাঞ্চের সময়ও দরজা বন্ধ দেখে হেডমাস্টার কে খবর দেওয়া হয়। অতঃপর ডাকাডাকি, ধাক্কাধাক্কি, দরজা ভাঙা, এবং কার্সিয়াং সদরের ডাক্তারবাবু পুলিশকে ডাকা। 

উনি যে শুধু মৃত তাই নয়, সারা গায়ে জল কাদা জ্যাব জ্যাব করছে, নাকের আর মুখের ভেতরও জল কাদা, উনি তাতেই দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। অথচ উনি পরিষ্কার বিছানায় শুয়ে। বিছানায় বা ঘরের অন্য কোথাও কোনো জল কাদার চিহ্নমাত্র নেই। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। 

আমি প্রথমে কাউকে দেখতে পেলাম না। ইতিমধ্য ম্যালি গেছে ডেভলিনকে জাগাতে। তারপর হঠাৎ দেখলাম, একটা আমাদের বয়সী ছেলে ম্যাকিন্টায়ারের কেবিনের দেওয়াল বেয়ে উঠছে। দেওয়াল বেয়ে কি কেউ উঠতে পরে? কিন্তু কি অদ্ভুত বিভৎস সেই ওঠার ধরন, যেন মানুষ নয় কাঁকড়া। হাত পায়ের জোড়গুলো কেমন কোনাকুনি বাঁকা বাঁকা। ইতিমধ্য ডেভলিনও এসে হাজির। ধবধবে চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখলাম সেই ছেলেটা, বা প্রাণীটা, তর তর করে কেবিনের ঢালু টিনের ছাত বেয়ে সোজা ওপরে উঠে গেল। তারপর হঠাৎ থেমে, মাথাটা ধীরে ধীরে পুরো পেছন দিকে ঘুরিয়ে সোজা ঠিক আমাদের দিকে তাকাল।

ঘরের জিনিসপত্র কিছু হারিয়েছে কিনা সেই সমন্ধে কেউ কোনো হিসেব যদি দিতে পারেন, সে কথা পুলিশ জিজ্ঞেস করাতে, বাংলা স্যার মিস্টার মিত্র বললেন, “দ্যাট শুড নট বি হিয়ারবলে একটা ছবি দেখিয়ে দিলেন। এক সাঁওতালি মা ছেলের ছোট্ট একটা পেন্সিল স্কেচ। ওটা মিস্টার গোস্বামীর অফিসে রাখা থাকে দেখেছি। পরে জেনেছিলাম, ওটি যামিনী রায় তাঁর স্নেহধন্য মিস্টার গোস্বামীকে নিজে হাতে এঁকে দিয়েছিলেন। আর হেডমাস্টার বললেন, “অ্যান্ড দ্য ড্যাগার ইজ মিসিং।সেইঢণ্ঢু চাঁদচাক্কু। সে নাকি বন্ধ শোকেসের ভেতর থেকে হাওয়া

ঘটনার এখানেই শেষ হবার কথা। কারণ এই মৃত্যুর কোনো মীমাংসা হয়নি।  ম্যাকিন্টায়ারের সংগ্রহের জিনিসপত্র নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ঘরে মিস্টার গোস্বামীর যামিনী রায়ের ছবি দেখেই প্রথম সন্দেহ হয়। তারপর একটা যুদ্ধ মেডেল পাওয়া গেল, যেটা মাস্টার মশায় ও স্টাফদের সবার চেনা। কিছুদিন আগেই স্কুলের বৃদ্ধ বেয়ারা সন্তু পুলিশের কাছে ডায়রি করেছিল যে তার বাবার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পাওয়া মেডেলটা খোয়া গেছে। তারপর একটা পাথরের সূর্য মূর্তি, সেন যুগের, দার্জিলিং পুলিশের খাতায় ছিল, মালদার মিউজিয়াম থেকে খোয়া যাওয়া। বাকি সব বেশির ভাগই বিদেশী অবশ্য, তার জন্য দিল্লিতে যোগাযোগ করে ইন্টারপোলের সাহায্য নেওয়া স্থির হলো। আপাতত সে সব জিনিস দার্জিলিংয়ের মিউজিয়ামে স্থান পাবে। তবে বন্ধ শো কেস থেকে লোপাট হওয়াঢণ্ঢু চাঁদছুরি নিয়ে আর কেউ মাথা ঘামাল না। পুলিশ ধরে নিল ওটা নিশ্চই ম্যাকিন্টায়ার শিলিগুড়ি গিয়ে আগেই কাউকে বিক্রি করে এসেছেন। 

বছর ঘুরতে থাকে। ধীরে ধীরে আমাদেরও স্কুল জীবন শেষ হয়ে গেল। যে যার নিজের মতো জীবনের স্রোতে ভেসে গেলাম। মাঝে মাঝে ম্যাকিন্টায়ারের অদ্ভুত মৃত্যুর কথা মনে পড়ত বটে, কিন্তু সময়ের প্রভাবে সেই স্মৃতি হালকা হতে থাকে। 

এর পর প্রায় তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর পেরিয়ে গেছে। ফেসবুকের দৌরাত্ম্যে হারিয়ে যাওয়া পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আবার নতুন করে যোগাযোগ হচ্ছে। ডেভলিন এখন শখের ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি করে, কী সুন্দর সব ছবি পোস্ট করে। রানা ফিউশন রক নিয়ে মত্ত, দেশে বিদেশে কনসার্ট করে বেড়ায়, সবই ফেসবুকে জানতে পারি। 

সেবার ডেভলিন আলাস্কা যাচ্ছে, পথে স্যান ফ্রান্সিসকো তে লেওভার। কিছুক্ষণ সময় হাতে পাওয়া গেল এয়ারপোর্টে দেখা করার জন্য। কথা সে কথার পর, ডেভলিন তখন উঠব উঠব করছে, ওর বোর্ডিং শুরু হবে এখনই, হঠাৎ সে জিজ্ঞেস করল, “এই খবর শুনেছিস? রানার?”

আমি বললাম, “হ্যাঁ, ফেসবুকে দেখি তো। গান গায়।

বললো, “আরে দূর। রানার কাকার।

আমি বললাম, “অ্যাঁ!”

বললো, “ম্যালি কে হোয়াটসঅ্যাপ করে কথা বল। আমি নম্বর মেসেজ করে দেব। এখন উঠি, বাই!”

জানি ম্যালি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে আছে, কিন্তু ফেসবুক করেনা বলে আর যোগাযোগ হয় নি। ডেভলিনের থেকে নম্বর পেয়ে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে ফোন করলাম। অনেক গল্প হল, পুরনো দিনের সব স্মৃতি। 

যাইহোক, রানার কাকার ব্যাপারে যা জানতে পারলাম তা এই। তিন চার বছর আগেকার ঘটনা। ম্যালি তখন কুচবিহারের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট। এমন সময় কার্সিয়াং পুলিশ থেকে ফোন আসে। স্কুলের কাছে ডিয়ার পার্কের দিকের রাস্তাটা মেরামতি করতে গিয়ে ঝোরার ওপরের কালভার্টটা পুরো ভেঙে নতুন করে বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। পি ডাব্লিউ ডির লোকেরা সেখানটা খুঁড়তে গিয়ে এক জায়গায় ধস নামে। সেই খানে মাটি পরিষ্কার করতে গিয়ে তারা একটি মানুষের কঙ্কাল পায়; বছর চোদ্দ পনেরোর একটি ছেলের কঙ্কাল। কখনও পড়ে গিয়েছিল, বা ফেলে দেওয়া হয়েছিল, হাড়গোড় ভেঙে যাওয়ায় আর উঠতে পারেনি। তারপর জল কাদার ধস নামায় চাপা পড়ে মারা যায়। 

কার্সিয়াংয়ের সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার ম্যালির জুনিয়র, তায় ম্যালি এই স্কুলের পুরনো ছাত্র, তাই সে ওকে ফোন করে জানায়। ম্যালিই ডি এন টেস্ট করানোর ওপর জোর দেয়। জুনিয়রটি বলে, “কিন্তু স্যার, তো  প্রায় ষাট সত্তর বছরের পুরনো, কোথায় ম্যাচ খুঁজবেন?”

ম্যালি বলে, “আমার আন্দাজ যদি ঠিক হয়, তাহলে একটা ফ্যামিলির সঙ্গে ম্যাচ করালেই চলবে।

হলোও তাই। আর কেউ নয়, চল্লিশের দশকে হারিয়ে যাওয়া রানার কাকা। রানার বাবা তখনো বেঁচে। ভাইয়ের শেষ কাজটা নিজে হাতে করে যেতে পারলেন।তবে“, ম্যালি বলে চলল, “কঙ্কালের সঙ্গে একটা জিনিস পাওয়া গিয়েছিল। কী আন্দাজ করতে পারিস?”

কী?” আমি বলি, দুরু দুরু বুকে। আমার আন্দাজ কি সত্যি?

একটা মারাঠা খঞ্জর, তাতে আঁকা বাঁকা হাতে খোদাই করাঢণ্ঢু চাঁদ।ম্যালি বলে

আমার বুকটা ধড়াস করে ওঠে।

রানার সেই পূর্বপুরুষ চাঁদ বাহাদুর রানাকে তাঁর বাল্য বন্ধুর দেওয়া উপহারনানা সাহেব ওরফে ঢণ্ঢু পন্থ ছুরির হাতলে দুই বন্ধুর নাম আনাড়ি হাতে খোদাই করে দিয়েছিলেন। 

ছবি সৌজন্য: Pinterest

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাকোত্তর করার পর শিবু এখন ডালাসে এক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। জীবনের নানান উপাখ্যানের ওপর কল্পনার জাল বুনে বন্ধুদের শোনাতে ভালোবাসে। লেখা দেখে মনে হয়, বয়েস কয়েকবার ওঠানামা করে এখন হয়েছে তেরো!

11 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com