banglalive logo
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

একটি কাল্পনিক সংলাপ (প্রবন্ধ)

Bookmark (0)
ClosePlease login

No account yet? Register

Rishi Kapoor

একজন গম্ভীর ভাবুক প্রকৃতির মানুষ দূরে ফিকে আলোটার দিকে তাকিয়ে। স্থূলকায় বড় একটা ছায়া ক্রমশ সামনে এগিয়ে আসছে ধীর পায়ে। চলার ভঙ্গিটা যেন খুব পরিচিত! না, সত্যিই নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না উশকোখুশকো আনমনা মানুষটি। আর তাছাড়া এটা তো সিনেমার সেট বা স্টুডিও নয়! তবে কি ভুল দেখছেন ইরফান খান? এতটা ভুল?! নাকি এটা নিছকই কল্পনা?

না! ভুল তো নয়! ওই তো হেঁটে আসছেন ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি ‘লাভার বয়’ ঋষি কাপুর! “ডি ডে” ছবির সহ-অভিনেতাকে চিনতে তো এখনই ভুল হবার কথা নয় ইরফানের! দীর্ঘ অবসরের পর ঋষির সিনেমায় ফেরা এবং ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া আর অন্যদিকে সেই একই রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে ইরফানের ডি-ডে ছবিতে অভিনয়– হয়তো বিষয়টা কাকতালীয়ই। কিন্তু যেটা চিরকাল সত্য হয়ে থাকবে, সেটা হল এ ছবিতে দু’জনের টক্কর দিয়ে অনবদ্য অভিনয়।

Rishi Kapoor
কোথাও কি এমন আড্ডা জমেছে এখন? ছবি সৌজন্য – techzimo.com

সম্পূর্ণ দু’টো ভিন্ন ঘরানার মানুষ। উপস্থিতিতে। উপস্থাপনায়। একেবারেই বিপরীত মেরুর, ভিন্ন ধারার। চরম বৈপরীত্য যাদের উত্থানে, সাফল্যে, জনপ্রিয়তার পরিমন্ডলে। তবে এই মুহূর্তে সবটাই অতীত। করোনা-বিদ্ধস্ত পৃথিবী থেকে দু’জনেই পাড়ি দিয়েছেন অন্য কোথাও, অন্য কোনওখানে। আর এই ফিরে না-আসার যাত্রাপথে দুই পথিক হঠাৎ মুখোমুখি। কিছুটা শূন্যতা, কিছুটা বিস্ময় আর একরাশ অব্যক্ত অনুভূতি নিয়ে। এই সাক্ষাতে স্বল্পভাষী, বিনয়ী, আত্মমগ্ন ইরফান কিছুটা স্বভাববিরূদ্ধভাবেই যেন অগ্রজ ঋষির কাছে প্রকাশ করে ফেলেন তাঁর বিস্ময়, কৌতূহল, আক্ষেপ। সিনেমায় ইরফানের চরিত্রগুলো যেমন খুব চেনা রক্ত মাংসের মনে হয়, তাঁর প্রশ্নগুলোও তেমনই আটপৌরে। সাধারণের মনের কাছাকাছিও।

ইরফান– আচ্ছা “ববি”-তে আপনার সাফল্য তো অনেকটা ‘এলাম দেখলাম জয় করলাম’ টাইপ। এটা কি পারিবারিক ঐতিহ্য এবং রক্তে সিনেমা বলে সম্ভব হল?

এ প্রশ্নের অদ্ভুত অকপট উত্তর মিলল রূপোলি পর্দার বৈভব নিয়ে জন্মানো মানুষটির কাছ থেকে। অনেকটা অপ্রত্যাশিতও বটে।

Rishi Kapoor
ববির সেই কিশোর। ছবি সৌজন্য – nationalherald.com

ঋষি– এটা ঘটনা যে আমি এমন পরিবারে জন্মেছি, ভারতীয় সিনেমার আঙিনায় যার অবদান ও পথচলার সাক্ষী একশো বছরেরও বেশি ইতিহাসের মাইলস্টোন। আমি অবশ্যই ভাগ্যবান। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, বংশ পরম্পরায় কখনও অভিনেতা সৃষ্টি হতে পারে না। হয়তো শেখার, জানার সুযোগ অনেক বেশি থাকে। আর ভারতীয় সিনেমায় গান একটা বিশেষ ভূমিকা রাখে ছবির জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রে। হিন্দি সিনেমায় এরকম উদাহরণ ভুরিভুরি। “হাম তুম এক কামরে মে বন্ধ হো, অউর চাবি খো যায়ে” এ গানটার মধ্যে যতটা রোম্যান্টিসিজম, যতটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল, তেমনই একটা অন্য রকম প্রাইভেসিও ছিল। অন্তত সত্তর দশকের শুরুতে দাঁড়িয়ে। সকলেই কোনও না কোনওভাবে নিজের মনের সুপ্ত বাসনাগুলো গানটার মধ্যে খুঁজে পেয়েছে। আর তাছাড়া প্রত্যেকটা সিনেমাই একটা টিমওয়ার্ক, সেটা আমাদের মতো যারা কাজ করে তারা সবথেকে বেশি ভালো জানে। অনেকে হয়তো মুখে স্বীকার করে না। মনে করে তাদের জন্যই একটা সিনেমা চলে, তারাই আল্টিমেট! আমি আমার আত্মজীবনীতে একদম নাম তুলে তুলে এঁদের কথা লিখেছি। আর একটা কথাও বলেছি। সেটা হল, আমার স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই যে সে সময় আমি মোটেই ভালো অভিনেতা ছিলাম না।

অগ্রজ এমনভাবে কথা বললে সেটাকে বিনয় না বলে উঁচু দরের মানসিকতা বলা উচিত, ইরফান জানেন। কিন্তু তিনি কিছু বলার আগেই ঋষি আলতো হেসে আবার শুরু করেন।

–একটানা প্রায় কুড়ি বছর কমবেশি একই ধরনের সিনেমা করে গেছি। সেই তথাকথিত প্রেমিক পুরুষের চরিত্র। নায়কোচিত। লার্জার দ্যান লাইফ।

ইরফান– আপনি সত্তর দশকের হিন্দি সিনেমার প্রথাগত নায়কের স্টাইল স্টেটমেন্টকে আরও রঙিন করে দিয়ে জায়গা করে নিলেন অগনিত নারী-হৃদয়ে। আপনার ছবির ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকল এমন কিছু গান যা এখনও অমলিন। ভালোবাসায়, বিরহে, বিচ্ছেদে, অব্যক্ত প্রেমে, আপনি প্রকৃত অর্থেই একজন রোম্যান্স আইকন।

এক মুহূর্তে যেন সেই ফেলে আসা দশকের ছবিটা ভেসে ওঠে “মেরা নাম জোকার”-এর শিশুশিল্পী ঋষি কাপুরের চোখের সামনে, যে হাঁ করে দেখেছিল ঝরনায় স্নানরতা সিমি গ্রেওয়ালকে। বলতে লাগলেন,

-হ্যাঁ, সে সময় অন্যায়ের বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়ানো অ্যাংরি ইয়ং ম্যান ইমেজের নায়কের মধ্যে আপামর ভারতবাসী নিজের অব্যক্ত ক্ষোভ, হতাশা, যন্ত্রণা দেখতে পেত। নায়কের কার্যকলাপই যেন তাদের ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতাকে ভুলিয়ে দিত। হয়তো নিখাদ প্রেম, ভালোবাসা, কমিটমেন্টের প্রতি দায়বদ্ধতা, হ্যাপি-গো-লাকি, উচ্ছ্বল এবং প্রাণবন্ত প্রেমের প্রকাশভঙ্গির দাবিও ছিল দর্শকের। সেটাই তাঁরা আমার মধ্যে পেয়েছিলেন।

ইরফান – অবশ্যই। কোনও কিছুই তো চিরস্থায়ী নয়। আপনিও একটা নতুন ধারার সিনেমাপ্রেমীদের রোল মডেল হয়ে উঠলেন ম্যানারিজম আর স্টাইলে। “হাম তুম” ছবির সেই “ম্যায় শায়র তো নেহি” গানে আপনার উপস্থিতি, হাসি, দর্শককে অনিবার্য সমর্পণের দিকে ঠেলে দেবেই। গোটা স্ক্রিন জুড়ে যেন আপনার আধিপত্য। অপ্রতিরোধ্য ছিল সেই আকর্ষণ!

Rishi Kapoor
সে সময়টায় হিন্দি সিনেমা হয়তো চেয়েছিল এমন এক নায়ক যার মুখে পুরুষোচিত কাঠিন্য কম। ছবি সৌজন্য – indianewengland.com

ঋষি কোনওদিনই মাসল্‌ম্যান ছিলেন না। হতে চেয়েছেন বলে মনেও হয় না। হিন্দি সিনেমা হয়তো চেয়েছিল এমন এক নায়ককে যার মুখে পুরুষোচিত কাঠিন্য কম। যার কথাবার্তা-আচরণে একটা কোমলতা। কমিক টাইমিং সমসাময়িক অনেকের থেকে ভালো। সেই মরচে না-পড়া চারিত্রিক বৈশিষ্টই ফুটে উঠল আবার, তাঁর কথায়। বললেন, ইরফানের মতো অভিনেতা আমার সম্পর্কে প্রশংসাগুলো আশা করি মন থেকেই করছে! কারণ আমি ওর ডাইহার্ড ফ্যান। ওর সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে বুঝেছিলাম ওর দক্ষতার মাপকাঠিটা আকাশছোঁয়া।

ইরফান বড় বড় ঘোলাটে চোখগুলো নিয়ে অপলক তাকিয়ে থাকেন। চিলতে চিলতে হাসি ফুটে ওঠে ঠোঁটে। ঠিক ওঁর অভিনয়ের মতোই। দোদুল্যমান সারাক্ষণ। ছুঁয়েও যেন ছোঁয়া যায় না, অধরা থেকে যায়! এরপর দু’জনেই একসঙ্গে হেসে ওঠেন প্রাণখুলে। তারপর আবার শুরুটা ইরফানই করেন।

-একটা ব্যাপার না বলে পারছি না। ওই সময়ের টিনএজার এবং তরুণীদের মধ্যে আপনার প্রতি অসম্ভব একটা ক্রাশ আমি নিজে চোখেই দেখেছি। এখনকার শাহরুখ, অক্ষয়, সলমানদের পোস্টার, তাদের ক্যারিশমা, তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে যেমন অনেক মেয়েদের মধ্যেই একটা উন্মাদনা দেখা যায়, প্রায় সে রকমই।

– সেটা এ যুগে হলে হয়তো না-ও হতে পারত জানো! সৌন্দর্য্য বা তথাকথিত দৈহিক আকর্ষণের সংজ্ঞাটা এখন অন্যরকম। একটা রাফনেস দেখতে চান দর্শক। আর তখন আমার চারপাশে বেশির ভাগ নায়কই অ্যাকশনে, নাচে আমার থেকে অনেক ভালো। লম্বা, টাফ, রাগিরাগি চোখ। হয়তো সেটারই একটা বৈপরীত্য থেকে আমার পথচলা শুরু। এতে আমার কোনও কৃতিত্ব নেই। এটা একেবারেই পারিবারিক। বায়োলজিক্যাল।

Rishi Kapoor
মানুষ চলে যায়। কিন্তু কিছু কম্পন, কিছু অনুরণন নদীর মতো বয়ে চলে আজীবন। ছবি সৌজন্য – facebook.com

কথাগুলো সত্যি। কিন্তু নিজের সম্পর্কে প্রাণখুলে সত্যি ক’জন বলতে পারেন? বিশেষ করে তিনি যদি হন নিজের সময়ে সাফল্য তথা খ্যাতির শীর্ষ ছোঁয়া শো-বিজনেসে থাকা কোনও মানুষ! একজন অভিনেতা, নায়ক! ইরফান এ বার তাই কাটাকাটা ভাবে বললেন,

-আমি একটু ইন্টারাপ্ট করছি স্যার। আপনি ‘হয়তো’ বলে শুরু করলেন ঠিকই, কিন্তু এখানে কোনও যদি বা কিন্তু নেই। আপনার সফিস্টিকেশন, বেবিফেস, নরম গলায় সংলাপ বলা, অসম্ভব রোমান্টিক হাসি, নজর ফেরাতে না-পারা চোখের আবেদন, ফেমিনিন সাইকোলজিতে একটা কাছের মানুষের রেপ্লিকা তৈরি করে দিয়েছিল– এটাই একমাত্র সত্যি। আর একটা কথা সিরিয়াসলি আমার মাঝেমাঝেই মনে হতো। যে একজন অভিনেতা হিসেবে আপনার যা দক্ষতা, সেটা আপনার কেরিয়ারের প্রথম ইনিংসে কাজেই লাগানো চরিত্রগুলোই এত একমাত্রিক ছিল– ববি, চাঁদনি, দিওয়ানা, হেনা, বোল রাধা বোল, দিওয়ানা, নাগিনা, কর্জ, প্রেমগ্রন্থ, সরগম, দামিনী …

ঋষি– হ্যাঁ, আমি অস্বীকার করছি না সেটা। ভালো স্ক্রিপ্টের অভাব ছিল বৈকি। তবে সিনেমার সঙ্গে জড়িত মানুষই একমাত্র জানেন, বোঝেন, গাছের ডাল ধরে নাচগান করাটাও কিন্তু নেহাত সহজ নয়! কারণ সেটা অবাস্তব। ব্যক্তিগত জীবনে আমাদের প্রেম ভালোবাসার প্রকাশটা ঠিক ও রকম নয়। বরং কেরিয়ারের শুরুর দিকে “জাহরিলা ইনসান” ছবিটা, মানে যেটা কন্নড় আর্থহাউস ক্লাসিক “নাগারাহাভু”র হিন্দি ভার্শন, সেটাতে আমার অভিনয়ে আমাকে কিছু বিশেষ মানুষের প্রংশসা এনে দিয়েছিল, যেটা আমার পাথেয় হয়ে আছে আজও।

Rishi Kapoor
বাঁয়ে দুই ভাই ঋষি-রণধীর। ডাইনে বাবা-ছেলে। রাজের কোলে ছোট্ট ঋষি। ছবি সৌজন্য – lokmat.com

ইরফান- “হান্ড্রেড অ্যান্ড টু নট আউট” সিনেমাটির একটি দৃশ্যে অমিতাভ বচ্চনকে আপনি খাইয়ে দিচ্ছিলেন। অনেকদিন মনে থাকবে ওই দৃশ্যটা। ইন ফ্যাক্ট ওটাই প্রমাণ করে দেয়, যে কোনও দিন আপনি যে কোনও তাবড় অভিনেতাকেও ছাপিয়ে যেতে পারেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি অভিনয়ের দিক থেকে “মুল্ক” আপনার সেরা কাজ। রিটায়ার্ড ইসলামবিদ্বেষী আইনজীবীর চরিত্রের সূক্ষ্ম ভাঁজ এবং পরিমিত এক্সপ্রেশন দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। “আজ জো হাম ফয়সলা কর রাহে হ্যায়, উও হামারে কল কা ফয়সলা করেগা।” অন্য অনেকেই হয়তো এরকম সংলাপ দর্শকের হাততালি কুড়নোর মতো করে বলবে। কিন্তু আপনি বরাবর একটা বাস্তবতা এবং ব্যালেন্স রেখে কথা বলেছেন। অতি-অভিনয়ের প্ররোচনায় পা না দিয়ে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রগুলোকে নিজের অভিনয়শৈলির গুণে বিশ্বাসযোগ্য এবং বাস্তবসম্মত করে তোলার কাজটা সহজ নয়। বিশেষত সেকেন্ড ইনিংসে! দো দুনি চার, মুল্ক, কপুর অ্যান্ড সন্স, অগ্নিপথ, পাটিয়ালা হাউস, হাম তুম, রাজমা চাওয়াল, ডি ডে, দ্য বডি.. এরকম আরও অনেক নাম বলা যায়।

Rishi Kapoor
‘মুল্ক’ ঋষির কেরিয়ারের অন্যতম সেরা কাজ বলে মনে করেন অনেকেই। ছবি সৌজন্য – theprint.in

ঋষি– আমি ওরও দুটো যোগ করি। লভ আজ কাল আর লাক বাই চান্স! এই ছবিগুলো করতে গিয়ে ভেতর থেকে একটা চ্যালেঞ্জ অনুভব করেছিলাম। আসলে আমি সত্যিই ভাগ্যবান যে আমি বড় হয়েছি কপুর পরিবারের রথী-মহারথীদের ভিড়ে। আমাদের পরিবার সব সময় দু’টো জিনিস শেখায়। একটা হচ্ছে, নিজের পেশাকে সম্মান করা আর দুই, সেটার প্রতি সৎ থাকা। আমি এটাও শিখেছি যে পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। সিনেমার দৃশ্য শুধু আমার একার মুন্সিয়ানা দেখানোর জায়গা নয়। সেখানে সহ-অভিনেতাকেও তার প্রয়োজনীয় স্পেসটুকু দিতে হবে। এটা একজন আর একজনকে ছাপিয়ে যাবার প্রতিযোগিতা নয়। আসলে আমি বরাবরই যোগ্যতায় বিশ্বাসী মানুষ। তাই অভিনেতা হিসেবে কখনও নিরাপত্তার অভাব অনুভব করিনি।

ইরফান – আপনাকে বিভিন্ন সময়ে আমি নানা ভাবে আবিষ্কার করেছি। আমার বিশ্বাস আপনার দর্শকরাও তাই।

ঋষি – যেমন?

ইরফান – আপনার সোশ্যাল মিডিয়া এনগেজমেন্ট, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ, সাম্প্রদায়িকতা থেকে জাতীয়তাবাদের মতো যাবতীয় বিতর্কিত বিষয়ে নিজের মতামত নির্ভীক ভাবে প্রকাশ করা…। তার ফলে আপনাকে প্রচুর লোক ভুল বুঝেছে। মিডিয়া ঈপনাকে অহঙ্কারি বলে দেগে দিয়েছে।

ঋষি– আমি দেখেছি, মানুষের অপছন্দের কথা বললেই তারা জাজমেন্টাল হয়ে যায়! আর যাঁরা সিনেমায় কাজ করেন, তাঁরা তো সবসময়ই খবরের মুখরোচক বিষয়। তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার বলে কিছু থাকতে পারে না! ইদানিং বয়েস বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এগুলো আর টলারেট করতে পারতাম না। রিয়্যাক্ট করে ফেলতাম।

ইরফান– কোনও আক্ষেপ আছে?

ঋষি – গুলজার সা’ব আমার ছবির জন্য কখনও স্ক্রিপ্ট বা গান লেখেননি, এটা একটা আক্ষেপ বলতে পারো।

ইরফান – আর?

ঋষি– একটা ঘটনা বলি, তারপর উঠব। ওদিকটায় দু’জনে হাঁটতে যাব। সবই তো নতুন এখানে।

Rishi Kapoor
ইন্ডাস্ট্রি কি সত্যিই তাঁর অভিনয় দক্ষতা কাজে লাগাতে পারল? ছবি সৌজন্য – drilers.com

ইরফান – আমার কিন্তু আপনার ব্যাপারে একটা আক্ষেপ আছে। হিন্দি সিনেমা জগৎ আপনাকে এক্সপ্লোরই করতে পারল না। বড্ড দেরি করে ফেলল আপনার অভিনয় ক্ষমতা কাজে লাগাতে। আর গোড়ার দিকে অনেক বড় বড় নামের ছায়ায় কিছুটা ঢাকা পড়ে থাকলেন আপনি- রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন, মিঠুন চক্রবর্তী, পরে সানি দেওল, শাহরুখ খান…।

ঋষি – ওসব কথা থাক। বরং একটা কম-জানা কথা বলি। অনেকেই মনে করে “ববি” তৈরি হয়েছিল আমাকে অভিনেতা হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে দেবার জন্য। আসলে সেটা নয়। “মেরা নাম জোকার” ছবির পর বাবার যে বিপুল ধারদেনা হয়েছিল, তার কিছুটা শোধ করার জন্যই বাবা একটা প্রেমের ছবি বানাবেন ঠিক করেন। বাবার ইচ্ছে ছিল রাজেশ খান্নাকে কাস্ট করার। কিন্তু সেই বাজেট ছিল না আমাদের। তাই গল্পটা বদলে টিন-এজ লাভ স্টোরি করে ফেলা হয়। আর আমি অভিনয় করি। তাই বলি, জীবন কখন তোমায় কী ভাবে চালিয়ে নিয়ে যাবে, কেউ জানে না। শুধু সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করাটাই আসল লড়াই। আর এটা তোমার থেকে ভালো খুব কম মানুষই জানে, অন্তত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে।

এরপর দু’জনেই চুপ। মানুষ চলে যায়। জীবন থেমে যায়। কিন্তু কিছু কম্পন, কিছু অনুরণন নদীর মতো বয়ে চলে আজীবন, ভূগোলের তোয়াক্কা না করেই। একটা ঝাপসা আলোর দিকে অপলক তাকিয়ে আছেন দু’জন মানুষ। আলোটা কিসের জানা নেই। হয়তো অন্য কোনও জীবনের।

সত্তরের দশকের শেষের দিকে কলকাতায় জন্ম অভিরূপের। স্কুলজীবন থেকেই বাংলা সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক। কলেজে বাংলা অনার্স নিয়ে পড়ার পাশাপাশি পুরোপুরি সাহিত্যে মনোনিবেশ। কিছুদিন ফ্রিলান্স সাংবাদিকতাও করেছেন। এরপরেই ঢুকে পড়া টেলিভিশনের জন্য স্ক্রিপ্ট লেখার আঙিনায়। সম্পূর্ণ আলাদা এক পরিবেশ এবং প্রস্তুতির সঙ্গে পরিচয়। একইসাথে চলতে থাকে গল্প-কবিতার পালা। দেশ, এই সময়, আজকের সম্পূর্ণা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু লেখা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

Banglalive.com/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.com and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: Banglalive.com/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives Banglalive.com/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com