ক্রিকেট ড্রেসিং রুম মানেই নানা মস্করা, রসিকতার ভাঁড়ার। ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৪৮তম জন্মদিনে শোনা যাক সেরকমই এক মজার গল্প।
সময়টা ২০০৫। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। আর্চ রাইভ্যাল পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচের আগে ড্রেসিং রুমে টিম মিটিং। দলের বাকিরা আগেই পৌঁছে গেছেন। সৌরভ ঢুকতেই পিন পড়ার নিস্তব্ধতা। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, সকলের সঙ্গে আলোচনা করে স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে ফেলতে হবে। কিন্তু একি? যুবরাজ, হরভজন এবং সেহওয়াগ এই তিনজনে দাদা এবং দলের ম্যানেজার এম বালাদিত্যর হাতে একটা খবরের কাগজের দুটো কপি ধরিয়ে দিল। তাতে দেখা যাচ্ছে দাদার সাক্ষাৎকার এবং সেখানে দলের সদস্যদের সম্বন্ধে তিনি যা নয় তাই বলেছেন। দাদার এই স্বভাব বিরুদ্ধ আচরণে সকলে ভেঙে পড়েছে।
সৌরভ তখন সকলকে বোঝাতে ব্যস্ত যে এর একটা কথাও সত্যি নয়, তিনি এমন কোনও সাক্ষাৎকার কোথাও দেননি। কিন্তু মুখের কথার চেয়ে ছাপার অক্ষরের জোর বরাবরই বেশি। দলের প্রত্যেককে আলাদা করে বুঝিয়েও কোনও সুরাহা করতে পারলেন না অধিনায়ক সৌরভ। এদিকে তখন ম্যানেজার নিজের হাতের কাগজ থেকে জোরে জোরে পড়তে শুরু করেছেন। তাতে দলের সকলে আরও মুষড়ে পড়েছে। সৌরভের মুখ লাল, চোখে জল। বুঝতে পারছেন না কীকরে এর সুরাহা হবে। কাউকে বোঝাতে না পেরে শেষে বললেন “বেশ তোমরা যখন আমার ওপর বিশ্বাস হারিয়েছ, আমি পদত্যাগ করছি।“
শেষমেশ দলের জেন্টলম্যান রাহুল দ্রাবিড় ক্যাপ্টেনকে বাঁচিয়ে দিয়ে বললেন “এপ্রিল ফুল!” এই নাটকের পর যখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ক্যাপ্টেন, দলের সকলে মিলে আর একটা কাগজ ধরিয়ে দিল দাদাকে। তাতে লেখা ‘দাদা উই অল লাভ ইউ’ আর তার তলায় দলের সকলের সই।
পরে জানা গেল ওই নকল কাগজ দুটো নাকি আগের রাতে প্ল্যান করে ছাপানো হয়েছিল। আর এই গোটা কান্ডে নাটের গুরু ছিল যুবরাজ সিং এবং হরভজন সিং।
ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য বেশ কয়েক বছর আগে ২০০০ সালে। যুবরাজ তখন সবে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। ডেবিউ-এর আগেরদিন ক্যাপ্টেন সৌরভ এসে বলেন “ওপেন করেগা?” এই প্রস্তাবে ভয় পেলেও তখনকার মতো নিজের মুখরক্ষা করতে হ্যাঁ বলে দিলেন। কিন্তু পরেরদিন ম্যাচের আগে বুঝলেন দাদা মস্করা করেছিলেন। সেদিন হজম করে নিলেও, চার বছর পর সুদে আসলে উসুল করে নিয়েছিলেন ক্যাপ্টেনের রসিকতা।
পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায় আকারে স্থূল, প্রকারে কুল এবং জোকার-এ মশগুল। ভালোবাসেন মার্ভেল, ডিসি, আর যা কিছু ফিশি। পূর্বজন্মে ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী ছিলেন। বর্তমানে বাংলার নেশায় বুঁদ। পরজন্মে গল-দের গ্রামে খোলা আকাশের নীচে গোল টেবিলে নৈশভোজের আসরে বসে বুনো শূকরের রোস্ট খেতে চান।