আগের পর্বের লিংক: খলিল জিব্রানের দ্য প্রফেট-এর অনুবাদ: [কথামুখ] [প্রেম] [বিবাহ] [সন্ততি] [দান ও দাক্ষিণ্য] [পান-ভোজন] [কাজ-কারবার] [দুঃখ ও সুখ] [ঘর-বসত] [পরিধেয়] [বিকি কিনি] [অপরাধ ও শাস্তি] [আইনসম্মত] [স্বাধীনতা] [যুক্তি ও আবেগ] [সময়] [ভাল ও খারাপ] [প্রার্থনা] [সুখ] [সৌন্দর্য]
ধর্ম
এক বৃদ্ধ যাজক বললেন, ধর্ম সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন।
তিনি বললেন:
আজ এই এতক্ষণ, এছাড়া আর অন্য কিছু কি আমি বলেছি?
আমাদের সব কাজ এবং তার যাবতীয় প্রতিচ্ছবিই কি ধর্ম নয়,
এবং সেইগুলিও যা হয়ত কাজ বা তার প্রতিচ্ছবি নয়, কিন্তু হৃদয় গভীরে সতত এক উদ্বেল বিস্ময় এবং খুঁজে চলা, এমনকি পাথর কুঁদে চলা বা তাঁত বোনা সেই হাতগুলি?
কেউ কি পারে, তার কাজকে ভক্তি থেকে এবং পেশাকে বিশ্বাস থেকে আলাদা করে নিতে?
কে আর তাঁর সামনে, সময় বিছিয়ে বলতে পেরেছে, “এটি ঈশ্বরের জন্য আর এই সময়টি আমার নিজের জন্য বরাদ্দ; বা এমনও কি কেউ বলতে পেরেছে যে, এ শুধুমাত্র আমার মনের আর বাদবাকিটুকু শরীরের জন্য বরাদ্দ সময়?
আমাদের তাবৎ সময়ই হল সেই ডানা, যা এক সত্তা থেকে অন্য সত্তায় বিচরণ করে মহাশূন্যে পাখা ঝাপটায়।
তাঁর ন্যায় বোধের বস্ত্রে, নিজেকে যে জড়িয়েছে, তার চাইতেও ভাল পোশাক হল তার নিজের নগ্নতা।
কারণ, একমাত্র তখনই, না বাতাস না সূর্য ভেদ করতে পারবে ঈশ্বরের ত্বক।
এবং যে তার নিজের প্রতিটি কাজকে নীতির নিগড়ে ব্যাখ্যা করে, সে আসলে তার গায়ক পাখিটাকেই খাঁচায় বেঁধেছে।
কিন্তু, মুক্তির গান কোনও আগল বা কাঁটাতার ভেদ করে তো আসেনা।
যার কাছে পূজার্চনা হল ইচ্ছে মতো খোলা এবং বন্ধ করবার জানলা মাত্র, সে কিন্তু আসলে দেখেনি তার নিজের অন্তরাত্মার বাড়িটিই, যেটির জানলাগুলি ভোর থেকে অন্য ভোরে অবারিত।
তোমার মন্দির ও ধর্ম তো তোমারই প্রাত্যহিক জীবন।
যখনই সেখানে প্রবেশ করবে তোমার সর্বস্ব নিয়ে , উজাড় হয়ে এসো।
আর সঙ্গে নাও লাঙ্গল, হাপর, কাঠের মাথাওয়ালা হাতুড়ি এবং সেই প্রাচীন বাজনাটিও।
অর্থাৎ যাবতীয় যা কিছু তুমি নিজে প্রয়োজনীয় বলে মনে কর, সে সমস্ত কিছুই।
কারণ, স্বপ্নাতুর তুমি কিছুতে ছাড়তেই পারবেনা তোমার সাফল্য, আবার একই সঙ্গে নামতেও তো পারবেনা তোমার ব্যর্থতার নীচেও।
নিজের সঙ্গেই তাই সবাইকেই নিয়ে চল।
প্রশংসায় তুমি ঠিক ততটা উঁচুতেই উড়বে, অন্যদের ঠিক যতটুকু প্রত্যাশা তোমার কাছে, এবং তুমি ওইটুকুই বিনত হতে পার, ঠিক যতটুকু হতাশ করেছ তাদের।
এবং ঈশ্বরকে যদি কিছুমাত্র চিনে থাক তো, জানবে যে তিনি কিন্তু কোনও বাধার সমাধান নন।
তার থেকে নিজের দিকে তাকাও এবং দেখ যে তোমারই সন্ততির সঙ্গে কেমন খেলে বেড়াচ্ছেন তিনি।
মহাশূন্যে চেয়ে দেখ; দেখতে পাবে যে বিদ্যুৎ ও ঝরে পড়া বৃষ্টিতে তাঁর হাত দু’খানি সামনে বাড়িয়ে দিয়ে, তিনি হেঁটে চলেছেন ওই মেঘের মধ্যে দিয়ে।
তাঁরই হাসি দেখবে ফুলের মধ্যেও, আর তারপরই দেখবে যে, ডালপালার মাথা দোলানোয় এবং পাতার মর্মরে সেই তাঁরই হাত নাড়ানোর অভিবাদন।
আড্ডা আর একা থাকা,দুটোই খুব ভাল লাগে।
লিখতে লিখতে শেখা আর ভাবতে ভাবতেই খেই হারানো।ভালোবাসি পদ্য গান আর পিছুটান। ও হ্যাঁ আর মনের মতো সাজ,অবশ্যই খোঁপায় একটা সতেজ ফুল।